মো, বনি, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি: একজন শিক্ষক ক্লাসরুমে পড়াবেন, ক্লাস রুমের বাইরে ও শেখাবেন,একজন শিক্ষকের শেখাবার গণ্ডি হতে হবে সুদূর বিস্তৃত,।
শার্ট আর প্যান্ট পরে কলম পকেটে গুজলেই শিক্ষক হওয়া যায় না। সোনতুনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এবারের এস এস সি সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না হুসাইন নামের এক দরিদ্র শিক্ষার্থী।
ঘটনাটি ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ৪ নং দৌলতপুর ইউনিয়নের সোনাতনপুর মাধমিক বিদ্যালয়ের ।
ঐ ভূক্তভোগী হরিণাকুন্ডু উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের ভূইয়াপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে মোঃ হোসাইন আলী সোনাতনপুর মাধমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র। ১৫ নভেম্বর ২০২১ খ্রীঃ ঐ স্কুল থেকে তার এস এস সি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিলো।অভিযোগে জানা যায় মোঃ হোসাইন আলী তার পরীক্ষার ফি বাবদ ২০০০ (দুই হাজার) টাকা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে অফিস সহকারী লুকমান হোসেনের নিকট জমা দেয়। চলতি বছরে তার এস এসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা।বিদায় অনুষ্ঠানের দিন সে প্রবেশ পত্র আনতে গেলে তাকে দেয়া হয়নি।ফন্দিবাঁজী লুকমান বলে হোসাইন তুমি কোনও টাকা দেওনি এখন ফরম ফিলাপ করতে হলে অতিরিক্ত ৩০০০ হাজার টাকা দিতে হবে। উপায়ুন্ত না পেয়ে আমি তাও আবার দিতে গেলে বলে এবছর আর হবে না।বিষয়টি আমার বাড়ির থেকে চাপদিলে পরবর্তীদিন শনিবারে ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক শাহাবুদ্দিনের কাছে জানালে তিনি তার কথা কর্ণপাত না করে অটোপাশ করিয়ে দেবো বলে শান্তনা দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেন।বিষয়টা ঐ ছাত্র একটু বেশি ঘুরা-ঘুরি করলে তখন তাকে জানান তার ফরম ফিলাপ হয়-নি।এবারে তার পরীক্ষা দেয়া হবে না।
হোসাইনের বাবা মিজানুর রহমান বলেন,আমি দিন আনি দিন খাই,প্রধান শিক্ষক শাহাবুদ্দিন ও অফিস সহকারী লুকমান হোসেন আমার ছেলের সঙ্গে এমনটা করা মোটেও ঠিক হয়নি,খুবই কষ্ট-দায়ক বিষয় আমি এর বিচার চাই।
কিন্তু এখানেই শেষ নয় ,কিছু দিন আগে ঐ স্কুলের উপবৃত্তির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছিলো।প্রতি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ১৭শ টাকা করে আদায় করা হয়েছে বলে জানিয়ে-ছিলেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
সোনাতনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে জানা গেছে,করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে প্রতিষ্ঠান প্রধান শাহাবুদ্দীন ও অফিস সহকারী লোকমান হোসেন মোবাইলে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে ডেকে এনে উপবৃত্তির তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রতিজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১হাজার থেকে ১৭শ টাকা পর্যন্ত আদায় করেন। ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী এনামুল, অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান, তহমিনা, রুশনা খাতুন, মমতাজ, উর্মি একই অভিযোগ করেন।
সোনাতনপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক শরিফুল ইসলাম,মকবুল হোসেন, ছহি উদ্দীন, আব্দুর রশিদ, রইচ উদ্দীন, আনোয়ার হোসেন, নেছারন খাতুন, দাউদ আলীসহ অনেকেই বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে উপবৃত্তি করে দেওয়ার জন্য ১ হাজার থেকে ১৭ শ পর্যন্ত টাকা নিয়েছেন।
’এনামুল, সাইদুর, তহমিনা, রুশনা খাতুন, মমতাজ, উর্মিসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে । এবং শিক্ষার্থী শিক্ষার্থীর অভিভাবক ম্যানেজিং কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন আরও জানান,আমাদের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী লোকমান হোসেন উপবৃত্তির তালিকায় নাম দিতে ১ হাজার থেকে ১৭শ করে টাকা নিয়েছেন। দুর্ণীতির অভিযোগে কিছুদিন আগে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও তার সুষ্ঠ্যু বিচার এখনও পর্যন্ত পায়-নি ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
হোসাইন বলেন,আমি এখন কি করবো,বছর জুড়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে এখন শুনছি আমার ফরম ফিলাপ হয়-নি। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমার শিক্ষা জীবন থেকে মূল্যবান দিনগুলি হারিয়ে গেলো।এর দ্বায় কে নিবে ? আমি পরীক্ষা দিতে চাই।আমি বিচার চাই।
এদিকে সোমবার (১৫ নভেম্বর) ঐ শিক্ষার্থীর অভিভাবক সহ অসংখ্য লোকজন হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি অভিযোগ দাখিল করেন বলে জানা গেছে।পরে হরিণাকুণ্ডু গণমাধ্যমের নিকট একাধিক গণ স্বাক্ষর দিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দ্বাবী করেন।
এ ব্যাপারে অফিস সহকারী লুকমান হোসেনের
সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পুর্ন মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন।একই কথা বলেন প্রধান শিক্ষক শাহাবুদ্দিনের।
হরিণাকুণ্ডু মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুর হক জানান,ইতিমধ্যেই আমি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি কিন্তু দুঃখের বিষয়,এস এস সি সমমানের পরিক্ষা নিয়ে খুবই ব্যস্ততার ভিতর আছি,২৩ তারিখের পর সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা নাফিস সুলতানা
জানান,লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে অধ্যক্ষ ও অফিস সহকারী লুকমান হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।