সাব্বির আলম বাবু, প্রতিনিধিঃ শীতের প্রকোপে বিপর্যস্ত ভোলার জনজীবন। জেলায় গত তিন দিন ধরে ঠান্ডা হাওয়া ও শীতের দাপট বেড়েছে। পৌষের শেষ দিকে এসে দিনের বেলা সূর্যের দেখা মিলছে অল্প সময়ের জন্য। সকাল থেকেই কনকনে ঠান্ডা বাতাস ও কুয়াশায় ঢেকে থাকে চারপাশ। ব্যাঘাত ঘটছে মানুষের দৈনন্দিন স্বাভাবিক কার্যক্রমে। শনিবার সকাল ৯ টায় এখানে নর্বনিম্ন ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল রেকর্ড করা হয়েছিলো ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে হাড় কাঁপানো শীতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের, শ্রমজীবী, খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে নদী পাড় ও চরাঞ্চলগুলোতে শীতের প্রকোপ বেশি। ভোলা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অধিকাংশ দোকান পাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বেলা করে খুলতে দেখা যায়। ইতোমধ্যে জেলায় শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাঘবে সরকারিভাবে ৪৩ হাজার ৫’শ ৪০ পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। ভোলা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মো: মাহবুব রহমান বলেন, ভোলার উপর দিয়ে মৃদ শৈত প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আজ সকাল ৯ টায় জেলায় ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রা আরো হ্রাস পাওয়ার আশংকা রয়েছে। আরো কিছুদিন এমন অবস্থা বিরাজ করতে পারে বলে জানান তিনি।
শহরের নতুন বাজার সড়কের রিকশা চালক হায়দার হোসেন, সবুজ আলম ও নিরব বলেন, রিকশায় দুপুর পর্যন্ত কিছু যাত্রী পাওয়া গেলেও বিকেলের পর থেকে আর যাত্রী পাওয়া যায়না। ঠান্ডার দাপটে মানুষজন রিকশায় উঠতে চায়না। আর শীতে তাদেরও কষ্ট হয়। সদরের তুলাতুলি এলাকার মেঘনা পাড়ের জেলে রফিকুল ও হাসেম মাঝি বলেন, গত দুইদিন বাতাস বাড়াতে শীত বাড়ছে। মাছ শিকারের অধিকাংশ সময় নদীতে থাকতে হয়। তাই গরম কাপড় গায় জড়িয়েই প্রতিকূল পরিস্থিতির সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হয়। তীব্র শীতের কারণে আবার অনেক জেলেই রাতে নদীতে যাচ্ছেনা। এদিকে প্রচন্ড শীতে গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। বিষেশ করে ফুটপাতের দোকানগুলোতে শীতের পোশাক কিনতে ক্রেতারা ভিড় করছেন। গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন স্থানে সাধারণ মানুষজনকে আগুন জ¦ালিয়ে অতিরিক্ত ঠান্ডা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে দেখা যায়। ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্তাবধায়ক মো: মনিরুল ইসলাম বলেন, ভোলায় তীব্র শীতে শিশুদের ঠান্ডা জাতীয় রোগ নিউমনিয়া বাড়ছে। আজকের শিশু ওয়ার্ডে ৭৮ জন শিশু রোগীর মধ্যে ৫৯ জনই নিউমনিয়ায় আক্রান্ত। তাই শীতে সব সময় বাচ্চাদের গরম কাপড়ে ঢেকে রাখতে হবে। ঠান্ডা লাগার প্রথম পর্যায়ে যদি শিশুদের চিকিৎসা দেয়া হয় তাহলে নিউমনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থাকেনা। তাই বাচ্চাদের ঠান্ডা জাতীয় সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরমার্শ গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি।