স্টাফ রিপোর্টারঃ গত তিন দিন ধরে টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে বিশ্ব ইজতেমাস্থল দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লির ভিড়। শিল্পনগরী টঙ্গী যেন পরিণত হয়েছে ধর্মীয় নগরীতে। লাখ লাখ মুসল্লি ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে পবিত্র কোরআনের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ বয়ানের মধ্য দিয়ে পার করলো গত তিন দিন। রোববার(১৫/০১/২০২৩ইং) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হল এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। সকাল ৯.০০টা ৫৮ মিনিট থেকে সাড়ে ১০.০০টা ২৫ মিনিটের মধ্যে এ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
আজ ফজর নামাজের পর থেকে বয়ান শুরু হয়। বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান। হেদায়েতি বয়ানের শেষে শুরু করা হয় আখেরি মোনাজাত। বিশ্ব তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা জুবায়ের আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন। মোনাজাতে মুসলিম বিশ্বের কল্যাণ ও শান্তি চেয়ে লাখো মুসল্লি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন।
বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মাহফুজ জানান, আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার রাত থেকেই ইজতেমাস্থল টঙ্গীর তুরাগ নদের তীর অভিমুখে মানুষের ঢল নামে। সকাল ৯টার দিকে ইজতেমা ময়দানের আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। শীত-ধুলো-বালি উপেক্ষা করে ৫-৬ কিলোমিটার দূরে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, কার, ট্যাক্সি ও অন্যান্য যানবাহন রেখে হেঁটেই মুসুল্লিরা ছুটে যান ময়দানের দিকে।
ফজরের নামাজের পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বোর্ডবাজার থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত পাঞ্জাবি ও টুপি পরা মানুষের ঢল নামে। গোটা মহাসড়কে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। প্রার্থনার জন্য হাত ওঠার সাথে সাথে যে যেখানে পারে পাটি, চট, জায়নামাজ ও পলিথিন বিচিয়ে মোনাজাতের জন্য দু’হাত তুলেন মুসুল্লিরা। এছাড়াও ময়দানের আশেপাশের বিল্ডিং-এর ছাদে ছাদে মুসুল্লিদের প্রার্থনা করতে দেখা যায়। কারোনা মহামারির সময় পেরিয়ে একত্রে আবারও সমবেত হতে পারায় মহান সৃষ্টিকর্তার দরবারে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন বারবার।
খুব দ্রুত ও নিরাপদে মুসল্লিরা যেন ময়দান ত্যাগ করতে পারে সে জন্য বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহনের ব্যবস্থা রয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, সাদা পোশাকে মুসল্লিদের বেশে পুলিশ মোতায়েনসহ ১০ হাজার পুলিশ ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের এলাকায় রয়েছে। তারা আখেরি মোনাজাতের পর মুসল্লিদের বাড়ি ফেরা পর্যন্ত সেবা দিবেন।
তবে দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এবছরের বিশ্ব ইস্তেমা আগামী ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি’২৩ ।