ডেস্ক রিপোর্টঃ সবকিছু ঠিক থাকলে কালই মহাকাশের পথে যাত্রা করবে বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দফায় দফায় তারিখ পেছানোর পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের নতুন তারিখ হচ্ছে আগামীকাল ১০ মে।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন খান গতকাল এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য পরীক্ষাও শেষ হয়েছে। সবকিছুই ইতিবাচক। এখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং যান্ত্রিক কোনো জটিলতা দেখা না দিলে ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় মহাকাশের পথে উড়বে বাংলার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, একই সময়ে ঢাকা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি ওই মাহেন্দ্রক্ষণে যুক্ত হবেন।
বিটিভিসহ বাংলাদেশের সব বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর উৎক্ষেপণ সরাসরি সম্প্রচার করার কথা রয়েছে। এর আগে ৫ মে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের কথা ছিল।
কিন্তু আবহাওয়া খারাপ হতে পারে এ আশঙ্কায় তা পিছিয়ে যায়। এ ব্যাপারে বিটিআরসির চেয়ারম্যান সম্প্রতি বলেছিলেন, স্পেসএক্স জানিয়েছে, ৫ মে নয়, ৭ মে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানো হবে। সেই তারিখেও স্যাটেলাইট পাঠানো সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার উৎক্ষেপণের তারিখ পরিবর্তন হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তি কোম্পানি ‘স্পেসএক্স’ ফ্লোরিডার কেইপ কেনাভেরালের লঞ্চ প্যাড থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণে ব্যবহার করবে একটি ফ্যালকন-৯ ব্লক ফাইভ রকেট।
৪ মে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারে নতুন এই রকেটের স্ট্যাটিক ফায়ার টেস্ট সম্পন্ন হয়। তিন হাজার ৫০০ কেজি ওজনের জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ফ্যালকন-৯ কক্ষপথের দিকে ছুটবে কেনেডি স্পেস সেন্টারের ঐতিহাসিক লঞ্চ কমপ্লেক্স ৩৯-এ থেকে। এই লঞ্চ কমপ্লেক্স থেকেই ১৯৬৯ সালে চন্দ্রাভিযানে রওনা হয়েছিল অ্যাপোলো-১১। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নির্মিত হয়েছে ফ্রান্সের তালিস এলিনিয়া স্পেস ফ্যাসিলিটিতে। স্যাটেলাইটের কাঠামো তৈরি, উেক্ষপণ, ভূমি ও মহাকাশের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ভূস্তরে দুটি স্টেশন পরিচালনার দায়িত্ব এ প্রতিষ্ঠানটির। নির্মাণ, পরীক্ষা, পর্যালোচনা ও হস্তান্তর শেষে বিশেষ কার্গো বিমানে করে সেটি কেইপ কেনাভেরালের লঞ্চ সাইটে পাঠানো হয়। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণেরজন্য প্রথমে
গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর তারিখ ঠিক করা হলেও হারিকেন আরমায় ফ্লোরিডায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় তা পিছিয়ে যায়। সরকারের আশা, বর্তমানে বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ যে ১৪ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়, ১০ মে এ উপগ্রহ উৎক্ষেপণে সেই অর্থ সাশ্রয় হবে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। স্যাটেলাইটে থাকছে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার। এগুলোর মধ্যে প্রাথমিকভাবে ২০টি ব্যবহার করবে বাংলাদেশ। অন্যগুলো ভাড়া দেওয়া হবে। স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১-এর গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি করা হয়েছে গাজীপুর ও রাঙামাটিতে।
B/D/P/N.