বিডি নীয়ালা নিউজ(১৭ই মার্চ১৬)-আন্তর্জাতি প্রতিবেদনঃ সৌদি আরবের সাম্প্রতিক পৌর নির্বাচনে ২১ জন নারী নির্বাচিত হয়েছেন। দেশটির ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো কোন জন দপ্তরে নারীরা কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
এদেরই একজন রাশা হেফজি। কিন্তু একজন সফল ব্যবসায়ী হওয়া সত্ত্বেও দায়িত্ব পালন করতে দিয়ে তাকে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছে।
প্রথমদিনেই তাকে জানিয়ে দেয়া হয়, তিনি পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে এক টেবিলে বসতে পারবেন না।
রাশা হেফজি অবশ্য হাল ছাড়তে রাজি নন। তিনি বলছেন, এ ধরণের নানা সমস্যার সঙ্গে আমরা পরিচিত। তাই বলে হতাশ হবার কিছু দেখি না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি পাল্টে যাবে বলেই আমরা আশা করি। প্রথম কাউন্সিলে যখন গেলাম, তখন অনেকেই আমাকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারেনি। তবে আস্তে আস্তে তাদের মনোভাব বদলেছে।
গত কয়েক বছরে সৌদি আরবে নারী ক্ষমতায়নে বেশ কিছু পরিবর্তন হয়েছে।
কিন্তু নারী অধিকার কর্মীদের দাবি, এখনো দেশটির নারীরা পুরুষদের সমান অধিকার পাচ্ছে না। অনেক কিছুই পুরুষরা করতে পারেন, কিন্তু দেশটিতে নারীদের তা করতে দেয়া হয় না। যেমন দেশটিতে নারীদের গাড়ি চালনা নিষিদ্ধ।
তবে অনেকেই বলছেন, কয়েক বছর আগে যখন বিশেষ ডিক্রী দিয়ে, বাদশাহর উপদেষ্টা পরিষদ হিসাবে পরিচিত, শুরা কাউন্সিলে ত্রিশজন নারীকে নিয়োগ দেয়া হয়, তখন থেকেই দেশটিতে পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে।
এই ত্রিশজনের একজন ড. লুবনাল আনসারী বলছেন, নির্বাচনে নারীদের জয়ী হয়ে আসার মতো বিষয়টি হয়তো অনেকের কাছে আঘাত লেগেছে। কারণ এটা পরিষ্কার করে দিচ্ছে, নারীরাও পুরুষদের মতো সমান যোগ্যতায়, তাদের মতোই এক দায়িত্বে এসেছে। এটা এদেশের সংস্কৃতির জন্য একেবারেই নতুন।
তবে তিনিও মনে করেন, একবারে না হলেও আস্তে আস্তে পরিবর্তন আসবে।
তবে নারীরা বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন শুরু করলেও সৌদি আরবে এখনো তাদের গাড়ি চালনা নিষিদ্ধ।
এই অধিকার আদায়ের দাবিতে অনেক দিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন নারী অধিকার কর্মী বেরিহা আল-জুবাইদি।
তার মতে, শুধু রাজনৈতিক সফলতা এলেই হবে না, সাধারণ নারীদের পুরুষদের সমান অধিকার অর্জন জরুরী।
তিনি বলছেন, নারীরা সৌদি আরবে নির্বাচিত হচ্ছে, এটা বিশ্বের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে। কিন্তু এটা শুধুমাত্র ক্ষতের চিকিৎসার মতো। কিন্তু আমার মতে, সত্যিকারের পরিবর্তন তখনি আসবে, যখন সব নারী পুরুষদের মতোই সমান অধিকার পাবে।
সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, দেশটির নারীদের দৈনন্দিন কাজের সিদ্ধান্তেও পুরুষ আত্মীয়দের অনুমতি দরকার হয়।
দেশটির অনেক নারী এখন তাই সত্যিকারের পরিবর্তনের দাবি করছেন, কিন্তু তারা জানেন না, এজন্য তাদের কতদিন অপেক্ষা করতে হবে।
সূত্রঃ বিবিসি বাংলা ।