জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিসমিল্লাহ সবজি পাইকারি বাজারে কৃষকের কাঁচামাল বিক্রির জন্য নিয়ে আসার সময় জোরপূর্বক আটকানো বন্ধ হচ্ছে না ৷
আজ সোমবার সকালে কৃষকরা কাঁচামাল নিয়ে আসলে রাবেয়া বাইপাস সড়কে বিভিন্ন স্থানে এসব সবজি জোর পূর্বক আটক করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পৌর পাইকারী সবজি বাজারে ৷ সবজি বাজারে গেলে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা এসব অভিযোগ করেন ৷
এবিষয়ে গত ২৪ অক্টোবর বাদি হয়ে সৈয়দপুর থানায় অভিযোগ করেন,বিসমিল্লাহ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আলম গোল্ডেন ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল রবিবার রাতে দুপক্ষকে থানায় ডাকেন থানার অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দীন ৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিসমিল্লাহ্ ব্যবসায়ী সমিতির মকছুদ আলম গোল্ডেন,সালাউদ্দীন,ইকবাল হোসেন বুলবুল,সেরাজুল,সবুজ,শাম্মুসহ অনেকে ৷ অপরদিকে সৈয়দপুর পৌর পাইকারী সবজি বাজারের উপস্থিত ছিলেন,তোফায়েল আহমেদ,হাজী সুজন,আরমান হোসেন,মুন্না, লাড্ডানসহ আরো অনেকে ৷
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে ওসি বলেন,কোন পক্ষই জোর করে কৃষকের কাঁচামাল আটক করতে পারবেন না ৷ কৃষকরা যেখানে খুশি সেখানেই ইচ্ছে মত কাঁচামাল ক্রয় বিক্রয় করবে ৷ কেউ বাঁধা সৃষ্টি করতে পারবেন না ৷ যদি কেউ বাঁধা সৃষ্টি করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ কিন্তু থানা থেকে বের এসে রাতেই একতা সমিতিতে বৈঠক করেন পৌর সবজি বাজার সংগঠনের নেতারা ৷ তারা বোতলাগাড়ি ইউনিয়ন থেকে ভাড়াটে লোকজন নিয়ে এসে হোটেলে খাইয়ে তাদের টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেন সকালে মালামাল আটক করতে ৷ সে অনুযায়ী সকালে তারা পুরোদমে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে মালামাল আটক করেন ৷ বাধা দিলেই তারা হুমকি দিচ্ছেন ৷ তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন সৈয়দপুর পৌর সবজি বাজার সমিতির নেতারা ৷ তাঁরা বলেন,কৃষকের কোন মালামাল আমাদের লোকজন আটক করছেনা ৷ কৃষকরা ইচ্ছা মত তাদের মালামাল দুটি বাজারে বিক্রি করছে ৷ তবে তারা অভিযোগ করে বলেন, রাবেয়া পাইপাসে যে সবজি বাজার গড়ে উঠেছে সেখানে বেচাকেনা কম হওয়ায় তারা মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে ৷ আর বোতলাগাড়ি ইউনিয়নে এসব কাঁচা পণ্য উৎপাদিত হয় ৷ তাই তারা সহজে এ বাজার নিয়ে আসেন ৷ এখানে আটকের কোন ঘটনা নেই ৷
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,সৈয়দপুর শহরে দুটি পাইকারি সবজি বাজার রয়েছে। এরমধ্যে সৈয়দপুর পৌর পাইকারী সবজি বাজার অপরটি বিসমিল্লাহ সবজি বাজার। প্রতিদিন সকালে গ্রাম থেকে আসা কৃষকের কাঁচামাল বিক্রয়ের জন্য বাজারে নিয়ে আসেন স্থানীয় কৃষকরা।পথের মধ্যে পৌর পাইকারী সবজি বাজারের লোকজন জোরপূর্বক কৃষকের কাঁচামাল আটকানোসহ বিভিন্ন ধরনের হয়রানি করা হয়। স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য নিজেই পাইকারি বাজারে প্রতিনিয়ত বিক্রি করেন। ইদানীং এক সপ্তাহ যাবত পৌর পাইকারী সবজি বাজার কমিটির হুকুমে, ভাড়াটে লোক দিয়ে কৃষকের কাঁচামাল পথের মধ্যে জোরপূর্বক আটক করে পৌর পাইকারী সবজি বাজারে নিয়ে যায় ৷
এমন অভিযোগ করেন কৃষক মুক্তা সরকার, জাহাঙ্গীর আলম, আশরাফুল হক,শ্রী জীবন চন্দ্র রায়, সাকিব ইসলাম, সাকিল আহমেদ।
তাছাড়া এই বাজারে সবচেয়ে কম মূল্যেই কাঁচামাল পাওয়া যাচ্ছে ৷ যা অন্য বাজারের তুলনায় অনেক কম ৷
উল্লেখ্য যে ইতিপূর্বে নতুন বাজার পৌর সবজি মার্কেটেও ওই চক্রটি মালামাল আনতে কৃষকদের বাধা প্রদান করেছিল। ওই সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, বিভাগীয় কমিশনার,জেলা প্রশাসক,উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানা পুলিশ ও পৌর মেয়রকে নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হলেও কোন সুরাহা হয়নি। যাহা সাংবাদিক মহলসহ সৈয়দপুরবাসী অবগত আছেন ৷ নতুন সবজি বাজারের অনেক ব্যবসায়ীর ক্ষতির মুখে পড়ে ব্যবসা বন্ধ করে দেয় ৷ ফলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেন এবং বিভিন্ন এনজির কাছে দেনা হয়ে পড়েন ৷ পরে অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা বন্ধ করে দেন ৷
কয়েক বছর পর তারা নতুন ভাবে রাবেয়া পাইপাসে সবজি বাজার চালু হলে তারা পূর্ণ রায় ব্যবসা শুরু করে আলোর মুখ দেখা শুরু করছে এমন সময় ওই মহলটি আবার মাথা চারা দিয়ে মালামাল আটক করছে ৷ এতে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা হুমকির পড়েছে ৷ যে কোন সময় সংগঠন দুটির মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে ৷ সুষ্ঠভাবে ব্যবসা পরিচালনা ও সংঘর্ষ এড়াতে ব্যবসায়ী,গ্রাহক ও কৃষকরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ৷
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন বলেন, অভিযোগ পেয়ে উভয় পক্ষকে ডেকে শান্তি পূর্ণ ভাবে ব্যবসা করতে বলা হয়েছে ৷ কোন পক্ষই কৃষকদের কাঁচামাল আটক করবে না ৷ কৃষকরা ইচ্ছে মত যার যেখানে মন চায় সেখানে মালামাল ক্রয় বিক্রয় করবে ৷ এতে কেউ বাঁধা দিতে পারবে না ৷ যদি কেউ বাঁধা দেয় তাহলে অভিযোগ পেলে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।