জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ বিধিবহির্ভূতভাবে গোপনে গঠিত মাদরাসা কমিটি বাতিল এবং নিয়োগ বাণিজ্যকারী দূর্নীতিবাজ সুপারকে অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচী পালন করেছে এলাকাবাসী।

সোমবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর ফাগুনের মোড় এলাকায় চৌমুহনী হতে বদরগঞ্জগামী সড়কে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজার রহমান, বাঙালীপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য স্বপ্ন চন্দ্র, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল আমিন, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাবিল সরকার প্রমুখ।

এলাকাবাসীর অভিযোগ লক্ষণপুর বালাপাড়া ইসলামীয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মো: শহিদুল ইসলাম দীর্ঘ দিন থেকে নানা অনিয়ম দূর্নীতি করে চলেছেন। একারণে প্রতিষ্ঠানের কোন উন্নয়ন হয়নি। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মান ও পরীক্ষার ফলাফলও খারাপ হচ্ছে।

তাছাড়া নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন লাখ লাখ টাকার। এভাবে সরকারী সুযোগ-সুবিধা নেয়ার পরও অবৈধভাবে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে পড়েছেন। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে প্রাপ্ত সরকারী বেসরকারী অনুদান ও বরাদ্দকৃত অর্থও তসরুপ করেছে।

সুপার তার অবৈধ কাজকে আড়াল করতে বা বৈধতা দিতে নিজের পছন্দের লোকজনকে নিয়ে গোপনে নিয়মবহির্ভূতভাবে কমিটি গঠন করেন। একই ব্যক্তিকে বার বার সভাপতি করে মাদরাসাটিতে একক আধিপত্য গেড়ে বসেছেন। নিজস্ব সম্পত্তির মত ইচ্ছেমাফিক মাদরাসা পরিচালনা করে চলেছেন।

বক্তারা বলেন, এবারও গোপনে মজিবর রহমানকে সভাপতি করে অবৈধ কমিটি গঠন করেছে সুপার। রাতারাতি এই কমিটি করায় অভিভাবক, শিক্ষকসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা কেউই জানতে পারেনি। সবার অগোচরে গঠিত এই পকেট কমিটি বাতিল করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনের পর গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কমিটি গঠনের দাবী জানান।

সেইসাথে ধারাবাহিক অনিয়ম দূর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের হোতা এই সুপারকে অপসারণ করে মাদরাসার শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। অনতিবিলম্বে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। নয়তো কোনভাবেই মাদরাসা চালাতে দেয়া হবেনা বলেও হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন তারা।

উল্লেখ্য, একই দাবীতে গত ২৯ মার্চ বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ডা: শাহাজাদ সরকারের ছেলে রাশেদুল ইসলাম সরকার রানার নেতৃত্বে কয়েকজন অভিভাবক মাদরাসার সুপারকে তার অফিসরুমে অবরুদ্ধ করেন। এসময় সুপারকে তাজুল নামে একজন চপেটাঘাত করাসহ ব্যাপক লাঞ্ছিত করে।

পরে সুপার শহিদুল ইসলাম এই ঘটনায় মামলা করেছে বলে জানা গেছে। রবিবার (৩ এপ্রিল) আসামীরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসেই আজ এই মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচী পালন করলো। এতে এলাকার প্রায় শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

একটি সূত্রমতে, চলতি বছরে উক্ত মাদরাসায় সহকারী সুপারসহ ৪ টি পদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ভাগ পেতেই মূলতঃ দুটি পক্ষ পারস্পারিক বিরোধে লিপ্ত হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে