জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে খরখড়িয়া নদীর উপর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে প্রতিদিন পারপার হচ্ছে ভ্যান, রিক্সা, মটর সাইকেল, শিক্ষার্থীসহ কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ। গত ৬০ বছর ধরে এভাবেই চলাচল করছেন ২০ গ্রামের মানুষ।
এলাকারবাসীর অভিযোগ, ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিরা ওই নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ভোট শেষে প্রতিশ্রুতিও ভুলে যান। তাই অবিলম্বে এখানে একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবি স্থানীয়দের।
সরজমিনে দেখা যায়, পূর্ব দিকে সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের তেলিপাড়া ও পশ্চিম দিকে জানের পাড় বা বসুনিয়াপাড়ার অবস্থান। আর এই ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার মধ্যভাগে রয়েছে খরখড়িয়া নদী। যাতায়াতের জন্য প্রায় ২০টি গ্রামের বাসিন্দারা নিজ উদ্যোগে এক হাজার ফুট দৈর্ঘের সাঁকোটি তৈরি করেন। আবার প্রতি বছর বর্ষার সময় সাঁকোটি ভেঙ্গে যায়। বর্ষা শেষ হলেই পুনরায় আবারও খরখড়িয়া (জানেরপাড়) নদীতে সাঁকো তৈরি করে স্থানীয়রা।
গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, প্রায় ৬০ বছর ধরে জীবনের ঝুকি নিয়ে তেলীপাড়া, পাঠান পাড়া, প্রামাণিক পাড়া, বালাপাড়া, বড়দহ, বসুনিয়াপাড়া, জানেরপারসহ খানসামা উপজেলা ও সৈয়দপুর পৌর এলাকার ২০টি গ্রাম ও মহল্লার ভ্যান, মটর সাইকেল চলাচল করছে এই সাঁকো দিয়ে।
বসুনিয়া পাড়ার শরিফুল বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে আমাদের এই ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াতের জন্য বাঁশের সাঁকোটি স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হয়। আমরা জীবনের ঝুকি নিয়ে যাতায়াত করি। যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কলেজ ছাত্র শাহিন বলেন, প্রতিদিন বাঁশের সাঁকো দিয়ে শত শত শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করে। কয়েকদিন আগে এই সাঁকো দিয়ে পার হতে গিয়ে এক ভ্যান চালক ও এক স্কুল ছাত্র নদীতে পড়ে গিয়েছিল। পড়ে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে। যাহার মধ্যে ভ্যান চালক আজিজের হাত ভেঙ্গে যায়। সে এখনো রংপুর মেডিকেলে ভর্তি আছে।
বসুনিয়া পাড়ার মোস্তাকুর বসুনিয়া বলেন, এই সাঁকোটির বদলে এখানে একটি ব্রিজের দাবী আমাদের দীর্ঘদিনের। ভোটের সময় বিভিন্ন নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আর আলোর মুখ দেখেনি।
বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুজ্জামান জুনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রায় ৫০/৬০ বছর ধরে আমার ও আমার পার্শ্বের ইউনিয়নের মানুষ বাঁশের সাকো দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করছেন। আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিলো বাঁশের সাকোটির স্থানে ব্রিজের ব্যবস্থা করার। এখানে ব্রিজ তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করি খুব শীগ্রিই সমস্যার সমাধা হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্রিজ নির্মাণ সম্ভব না হলেও দুই বছর যাবত ২ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা ব্যয়ে (উন্নয়ন তহবিলের টাকা) সাঁকো তৈনি করে দেওয়া হচ্ছে।
সৈয়দপুর উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আলী রেজা রাজু বলেন, ওই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ নিরসনের জন্য ইতিমধ্যে খরখড়িয়া নদীর যানের পাড়ে ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলেই খুব শীগ্রিই ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।