জয়নাল আবেদীন হিরো ,নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নিষিদ্ধ ঘোষিত এক হাজার তিন শ’ পিস নেশাজাতীয় ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ সৈয়দপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ মে) বেলা ১ টা ৫০ মিনিটে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের (রংপুর রোড) বাঙ্গালীপুর এলাকার জান্নাত হোটেলের সামনে এক মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে তাঁকেসহ আরও এক যুবককে গ্রেপ্তার করে র্যাব -১৩, রংপুর, সিপিসি-২, নীলফামারী ক্যাম্পের সদস্যরা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে, শহরের মিস্ত্রিপাড়ার জয়নাল আবেদীনের ছেলে খাইরুল ইসলাম রানা (২১) এবং নতুন বাবুপাড়ার রতন সরকারের ছেলে ওমর ফারুক চঞ্চল (২২)। এ ঘটনায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে। রানা সদ্য ঘোষিত সৈয়দপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সৈয়দপুর সরকারী ডিগ্রী কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার (৩১ মে) বেলা ১ টার দিকে গোপন সূত্রে প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে র্যাব -১৩, রংপুর, সিপিসি-২ নীলফামারী ক্যাম্পের ডিএডি (জেসিও) মো. শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে র্যাব সদস্যরা উল্লেখিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানকালে ওই এলাকার জান্নাত হোটেলের সামনে পাকা সড়কের ওপর থেকে খাইরুল ইসলাম রানা (২১) এবং ওমর ফারুক চঞ্চল (২২) দুই যুবককে আটক করে। পরে তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে এক হাজার তিন শ’ পিস নিষিদ্ধ ঘোষিত ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে। যার মূল্য প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট বিক্রির নগদ এক হাজার পাঁচ শ’ টাকা এবং ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। পরে উদ্ধারকৃত ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট, জব্দকৃত নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনসহ গ্রেপ্তারকৃতদের সৈয়দপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় র্যাব -১৩, রংপুর, সিপিসি-২ নীলফামারী ক্যাম্পের ডিএডি (জেসিও) মো. শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য আইনে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২১। তারিখ-৩১/০৫/২০২২ ইং।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল হাসনাত খান র্যাবের অভিযানে ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেটসহ দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তার দুই যুবককে আদালতের মাধ্যমে নীলফামারী কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা ছাত্রলীগের নব পদপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম সাদিকুর রহমান সজিব এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কেউ যদি কোন ধরণের অপরাধে জড়িত থাকে সেটার জন্য সে ব্যক্তিগতভাবে দায়ী। তবে বিষয়টি জেলা কমিটিকে জানানো হয়েছে। বহিষ্কারের ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নিবেন।
নীলফামারী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুল হাসান শাহ আপেল মোবাইলে জানান, বিষয়টি আমি জানিনা। তবে এমন অবৈধ কাজে জড়িত থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এবার ছাত্রলীগের সৈয়দপুর উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠনে পদ প্রদানে ব্যাপক বাণিজ্য করা হয়েছে। একারনে রানার মত অনেককেই অযোগ্য হয়েও টাকার বিনিময়ে পদ পেয়ে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এতে দলীয় ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এর প্রেক্ষিতে তিনি পদ বাণিজ্যের কথা অস্বীকার করে বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত সে ব্যাপারে কোন মন্তব্য না করাই ভালো। তাই তিনি আর কোন কথা বলতে রাজি নন বলে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।