জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের মামলায় জামিন লাভ করায় এবার সৈয়দপুর পৌর মেয়র রাফিকা আকতার জাহানের বিরুদ্ধে জামিন বাতিল চেয়ে মামলা দায়ের করেছেন মামলার বাদী গাউসুল আযম ফারুকী। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) নীলফামারী দায়রা জজ আদালতে এই মামলা করা হয়েছে।
জানা যায়, লিফট স্থাপনের নকশা অনুমোদন প্রদানকে কেন্দ্র করে পৌর মেয়র রাফিকা আকতার জাহান গাউসুল আযম ফারুকীর কাছ থেকে এক লাখ টাকার চেক গ্রহণ করেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তিনি লিফট স্থাপনের নকশা অনুমোদন প্রদান করেননি। এ কারণে গাউসুল আযম ফারুকী মেয়র রাফিকা আকতার জাহানের বিরুদ্ধে আমলী আদালত সৈয়দপুর, নীলফামারীতে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্তের জন্য বিজ্ঞ আদালত সিআইডিকে আদেশ প্রদান করেন। সিআইডি দীর্ঘদিন তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মেয়র রাফিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধি ৪০৬/৪২০ ধারায় আদালতে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালত সিআইডির দাখিলকৃত অনুসন্ধান প্রতিবেদনটি গ্রহণ করে মেয়র রাফিকার বিরুদ্ধে সমন জারি করেন এবং ১৫ জুন ২০২২ ইং তারিখে জামিনের জন্য আদালতে হাজির হতে বলেন।
কিন্তু মেয়র রাফিকা আদালতের ধার্য্য তারিখের আগেই সুকৌশলে ও বেআইনিভাবে নিম্ন আদালতের মামলার কাগজপত্রের ফটোকপি উঠিয়ে মহামান্য হাইকোর্টে গিয়ে ২০ এপ্রিল ২০২২ ইং তারিখ পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন জামিন লাভ করেন এবং উক্ত তারিখে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, নীলফামারীতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত মামলার ধার্য্য তারিখ ১৫ জুন ২০২২ ইং তারিখ পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
পরবর্তীতে মামলার ধার্য্য তারিখে মেয়র রাফিকা আদালতে হাজির হয়ে পুনরায় জামিনের আবেদন করলে বাদীপক্ষের উকিল জামিনের বিরোধিতা করেন। কিন্তু বিজ্ঞ আদালত মেয়র রাফিকাকে পুনরায় অন্তবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। এভাবে বার বার মেয়র রাফিকাকে অন্তবর্তীকালীন জামিন দেয়ায় বাদী গাউসুল আযম ফারুকী মেয়র রাফিকার জামিন বাতিল চেয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ জুন ২০২২ইং) তারিখে দায়রা জজ আদালত, নীলফামারীতে মামলা দায়ের করেন।
মামলার আরজিতে বলা হয়, কোর্ট পিটিশন মামলা কিংবা সিআর মামলায় আসামীর বিরুদ্ধে সমন জারির পর আদালতের ধার্য্য তারিখের আগে মহামান্য হাইকোর্টে যাওয়ার কোন সুযোগ আইনগতভাবে নেই। কিন্তু মেয়র রাফিকা তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধি ৪০৬/৪২০ ধারায় সমন জারির খবর শুনে সুকৌশলে ও বেআইনিভাবে নিম্ন আদালত থেকে মামলার কাগজপত্রের ফটোকপি উঠিয়ে মহামান্য হাইকোর্টকে ভুল বুঝিয়ে জামিন লাভ করেন।
পরবর্তীতে নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে নিম্ন আদালত অজামিনযোগ্য ধারা বাংলাদেশ দন্ডবিধি ৪০৬/৪২০ থাকার পরেও মেয়রকে জামিন প্রদান করেন যা বিজ্ঞ আদালতের যুক্তিযুক্ত হয়নি। এছাড়া জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হওয়ার পরেও মেয়র রাফিকা প্রতারণার মাধ্যমে বাদীর কাছ থেকে অর্থ আত্মসাত করেন সে কারণে তাকে জামিন প্রদান করা উচিত হয়নি।
বাদী গাউসুল আযম ফারুকীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, মেয়রের জামিন বাতিল চেয়ে দায়রা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছি। প্রয়োজনে মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্টে জামিন বাতিল চেয়ে মামলা দায়ের করবো।