ডেস্ক রিপোর্টঃ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সংস্থাসমূহের নিজস্ব তহবিল এবং পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দসহ আগামী অর্থবছরের জন্য বৃহস্পতিবার ১ লাখ ৮০ হাজার ৮৬৯ কোটি ১৭ লাখ টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিতে পারে।
পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, আগামী এডিপি অবশ্যই দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বৃহত্তম উন্নয়ন বাজেট হবে। এতে পদ্মা সেতু, রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেল, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্লান্ট, পদ্মসেতু রেল লিংক, ঢাকা মেট্টো রেলের মতো কিছু মেগা অবকাঠামো নির্মাণ জোরদারে গুরুত্ব দেয়া হবে। নগরীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে এনইসি চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন।
কর্মকর্তা বাসসকে বলেন, মোট এডিপি’র ১,১৯,৮১০.৯৫ কোটি টাকা স্থানীয় উৎস থেকে এবং ৬১,০৫৮.২২ কোটি টাকা বিদেশী উৎস থেকে আসতে পারে। তিনি বলেন, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাসমূহের তহবিল ৭,৮৬৯.১৭ কোটি টাকা বাদে আগামী অর্থবছরের অনুমিত মূল এডিপি দাঁড়াবে ১,৭৩,০০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১,১৩,০০০ কোটি টাকা আসবে স্থানীয় উৎস থেকে এবং বাকী ৬০,০০০ কোটি টাকা আসবে বিদেশী উৎস থেকে।পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তা বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এডিপি বরাদ্দ ২০১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বরাদ্দ থেকে ১৬.৫৯ শতাংশ অথবা ২৪,৬১৯ কোটি টাকা বেশি।
কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং বিভাগ যদি যৌক্তিক চাহিদা তুলে ধরে তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাদ্দ বাড়াতে পারেন। রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঢাকা মেট্রোরেল, কর্ণফুলি টানেল এবং মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলো ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেতে পারে।
প্রস্তাবিত এডিপি’তে পরিবহন খাতে ৪৫,৪৪৯ কোটি টাকার সবোর্চ্চ বরাদ্দ পাবে। এই অর্থ মোট বাজেটের ২৬.২৭ শতাংশ। বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ পাবে ২২,৯৩০ কোটি টাকা। যা মোট বরাদ্দের ১৩.২৫ শতাংশ। ফিজিকেল প্লানিং, ওয়াটার সাপ্লাই, হাউজিং সেক্টর পাবে ১৭,৮৯০ কোটি টাকা। পল্লী উন্নয়ন সংস্থা পাবে ১৬,৬৯০ কোটি টাকা। শিক্ষা ও ধর্ম পাবে ১৬,৬২০ কোটি টাকা, বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পাবে ১৪,২১০ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য ১১,৯০৫ কোটি টাকা, কৃষি ৭,০৭৬ কোটি টাকা, পানি সম্পদ ৪,৫৯২ কোটি টাকা এবং জনপ্রশাসন পাবে ৩,৩৬১ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরের জন্য বাষির্ক উন্নয়ন প্রকল্পে (এডিপি) গত ৭ মার্চ সরকারের সংশোধিত বরাদ্দে ছিল ৯৬,৩৩১ কোটি টাকা, তবে বিদেশী তহবিল ৮.৬৮ শতাংশ কমায় হয় ৫২,০৫০ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অপর এক কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, রেল মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয় একং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অগ্রাধিকার ভিত্তিক ১০টি মেঘা প্রকল্পে প্রায় ১,২৮,১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিক পদ্মা সেতু প্রকল্পে, সেতু বিভাগ পরবর্তী এডিপি’তে ৯,১১২ কোটি টাকা বরাদ্দ পাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ পাবে ২০,৮১৭ কোটি টাকা, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নে রেল মন্ত্রণালয় পাবে ১১,১৫৪ কোটি টাকা, পাশাপাশি মহেলখালীতে এলএনজি টার্মিনাল প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনা করে বিদ্যুৎ বিভাগে বরাদ্দ দেয়া হবে ২২,৮৯৩ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, আগামী অর্থবছরের মধ্যে এডিপিতে মোট ১,৩৪৬টি উন্নয়ন প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পাশাপাশি স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫০টি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
কমিশনের মুখপাত্র জানান, মোট ১,৩৪৬টি প্রকল্পের মধ্যে প্রায় ১,২২৭টি প্রকল্প হচ্ছে বিনিয়োগ প্রকল্প, ১১৭টি প্রকল্প হচ্ছে কারিগরি সহায়তা প্রকল্প। এরমধ্যে দুটি হচ্ছে জাপান ঋণ সহায়তা প্রকল্প এবং বাকি প্রকল্পগুলো হচ্ছে সরকারের স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান।
প্রস্তাবিত এডিপি’তে ৬১টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ (পিপিপি) এর মাধ্যমে।
B/S/S/N.