ডেস্ক রিপোর্টঃ রাজধানীর অভিজাত এলাকা উত্তরা মডেল টাউনের ১৩ নম্বর সেক্টর সোনারগাঁও জনপথ সড়কের জমজম টাওয়ারের পশ্চিম পাশে রাজউকের পরিত্যক্ত জমিতে গড়ে উঠা একটি দোকানে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে মোটা অংকের টাকা মাসোয়ারা দিয়ে রাত দিন চলে জমজমাট জুয়ার আসর। বৃহত্তর উত্তরা এলাকার প্রভাবশালী মহলের কতিপয় বেশ কিছু পরিবহন নেতার ছত্রছায়ায় এখানে দিব্যি চলছে জায়ার আসর।

মাঝে মধ্যে জুয়ার টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে এক পক্ষ ও জুয়াড়িদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ও ঘটেই চলেছে। যদি কেউ জুয়ার খেলা বন্ধের প্রতিবাদ করে তাহলে তাকে হতে হয় নাজেহাল,হয়রানি কিংবা বলির পাঠা। সে কারনে মানুষ জুয়া খেলা বন্ধ সহ জুয়াড়িদের গ্রেফতারের জন্য মাননীয় স্রাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (এমপি). মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল ইসলাম, ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও ডিএমপি উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জয়দেব কুমার ভদ্র সহ আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উত্তরা মডেল টাউনের সর্বস্তরের জনগণ।

আজ রোববার সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উত্তরা মডেল টাউনের ১৩ নম্বর সেক্টর সোনারগাঁও জনপথ সড়কের জমজম টাওয়ারের পশ্চিম পাশে শাহীনের চা দোকানের পাশে মো: আবুল হাসেম ওরফে হাশেস এর দোকানে দীর্ষ দিন ধরে চলছে জুয়া খেলার আসর। বাংলাদেশ ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মো: বশির উদ্দিনের ছত্রছায়ায় এখানে জুয়ার আসর বসে। টাকার বিনিময়ে দিবা-রাত্রি চলে জুয়া,গাঁজা ও ইয়াবা সেবন। উত্তরা সোনার গাঁও জনপথ সড়কের রেন্ট-এ কার মালিক সমিটির নামধারী নব্য আওয়ামীলীগ নেতা – এর সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। এছাড়া জুয়ার আসরের পাশে রেন্ট-এ কারের একটি খালি ঘরে রাতের বেলায় গোপনে জুয়ার আসর বসে।

জানা গেছে, শাহীনের চা দোকানের পাশে মো: আবুল হাসেম ওরফে হাশেস এর দোকানে শনিবার দিবাগত সন্ধ্যা রাত সাড়ে ৭টার দিকে ১০ থেকে ১২জনের একদল জুয়ারি তাস দিয়ে জুয়া খেলছিল। তার মধ্যে হাসেম ওরফে হাসু, চা- দোকানদার শাহীন, নিজাম, মিজান,মামুন, আওয়াল, বশির, জসিম, প্রমুখ। এসময় উত্তরা পশ্চিম থানার একদল টহল গাড়ি গিয়ে সোনারগাঁও জনপথ সড়কে গিয়ে দাঁড়ায়। তখন গাড়ি থেকে পুলিশ কনস্টেবল মোস্তফা ও আনসার সদস্য কুতুব উদ্দিন গাড়ি থেকে নেমে পোষাক পরা অবস্থায় জুয়ার আসরে যায়। তারা উভয়েই ১ থেকে ২ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকে। তখন পুলিশ কনস্টেবল মোস্তফা জুয়াড়িরে উদ্দেশে বলে,আমাদের টাকা দেন,কাজ আছে। এরপর জুয়াড়িরা পকেট থেকে প্রতিদিনের মতো ২শ টাকা তাদের হাতে গুজে দিলে তারা আস্তানা ত্যাগ করে চলে যায়। পরিবহন মালিক জুয়াড়ি আওয়াল জানান, আমি আজ ১৮টি গেম (জুয়া) খেলেছি। থানা পুলিশ,রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা ও শ্রমিক নেতাদেরকে মাসোয়ারা দিয়ে এখানে জুয়া খেলি।

একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, কিছু দিন আগে এই জুয়ার আসরে ৫ টাকার জন্য জুয়াড়িরে মধ্যে সংষর্ঘ ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ৪ থেকে ৫জন আহত হয়। উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ জুয়ার খেলার আসরের পথ দিয়ে দৈনন্দিত যাতায়াত করে থাকে। থানা পুলিশের সামনে প্রকাশে চলে জুয়া খেলা।

সুত্র আরও জানান, উত্তরা পশ্চিম থানার ১৩ নম্বর সেক্টর সোনারগাঁও জনপথ সড়কের জমজম টাওয়ারের পশ্চিম পাশে শাহীনের চা দোকানের সামনে রাজউকের পরিত্যক্ত জমি ( উত্তরা তাঁত ও বস্ত্র মেলার) বসানোর খালি জায়গা ও টিনের ভেড়ার ভেতরে বসে গাঁজা ও ইয়াবার আসর। এখানে এক শ্রেনীর বখাটে যুবক ও দূর দূরান্ত আসা বড় লোকের কলেজ ও বিশ^ বিদ্যালয়ে পড়–য়া শিক্ষার্থীরা বসে আড্ডা জমায়। পাশাপাশি তারা মাদকসেবন করে।
এবিষয়ে জানতে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আলী হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। সেকারণে উত্তরা এলাকার সর্বস্তরের জনগণ ও সচেতন মহল জুয়া খেলা বন্ধ ও মাদক বন্ধের জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

CRbd/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে