ডেস্ক রিপোর্টঃ জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় কৃষকরা আগাম আলু চাষের ব্যস্ত সময় পার করছেন। জমি তৈরি করে আলু বীজ লাগানো এবং আলু ক্ষেত নিরানীর কাজে এখন ব্যস্ত কৃষকের সাথে কৃষি শ্রমিকও।
উপজেলায় এবার আগাম জাতের আমন ধানের ব্যাপক আবাদ হয়েছিল। আগাম ওই ধান এবারে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছে। এখন ওই জমিতে আলু চাষ করে আগাম বাজার ধরতে চায় কৃষক।
তারা বলছেন, ‘আগাম জাতের আমন ধান উঠিয়ে লাভবান হয়েছে। এবার ওই জমিতে আগাম আলু চাষেও লাভ করতে চাই। আলুর পর জমিতে গম অথবা ভ্ট্টুার আবাদ সম্ভব হবে।
উপজেলার কেশবা গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, আগাম জাতের আলু বিঘা প্রতি উৎপাদন হয় প্রায় আড়াই হাজার কেজি। বাজার ধরতে পারলে অন্তত ৫০ টাকা দরে প্রতি কেজি আলু বিক্রি করা সম্ভব হবে। এতে খরচ বাদে প্রতি বিঘা জমির আলু আবাদ থেকে অন্তত ৫০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব হবে।
একই উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের পানিয়াল পুকুর গ্রামের কৃষক মোছারুল ইসলাম গত বছর পাঁচ বিঘা জমিতে তিনি আগাম আলুর আবাদ করেছিলেন। এবার আবাদ করবেন ১০ বিঘা জমিতে।
তিনি বলেন,‘আগাম আলু চাষে লাভ বেশী হয়। এ কারণে দিন দিন আলুর আবাদা বাড়ছে। ফলন ভালো ও লাভ হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছে।’
একই গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন,‘এবারে ছয় বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলুর আবাদ করেছি, এখন পরিচর্যার কাজ চলছে। ৬০ দিনের মধ্যে আলু তুলে বাজারে বিক্রি করা যায়। ওই ছয় বিঘা জমির আবাদে আমার খরচ হবে প্রায় দেড় লাখ টাকার উর্ধ্বে। আগাম বাজার ধরে অন্যান্যবার ওই পরিমাণ জমির আলু বিক্রি করেছি তিন লাখ টাকার উর্ধ্বে, এবারে আরো বেশী লাভের আশা করছি।’
এলাকায় আগাম আলুর আবাদে অসময়ে কাজ খুঁজে পেয়েছে কৃষি শ্রমিকরা। তারা বলছেন, আগে এ সময়ে কোন কাজ থাকতো না এলাকায়।
গ্রামের নারী কৃষি শ্রমিক মিলন বালা রায় জানান, ‘আলুর জমিতে কাজ করে দেড় থেকে দুই শ’ টাকা আয় করছি। আগে এ সময়ে কাজ না থাকায় না খেয়ে থাকতে হতো।’
অপর নারী কৃষি শ্রমিক জোসনা রায় বলেন,‘আগে আশ্বিন- কার্তিক মাসে কোন কাজ থাকতো না এলাকায়। এখন আগাম জাতের ধান এরপর আলুর আবাদ আসায় সে অভাব দূর হয়েছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, জেলায় এবার ১ লাখ ১২ হাজার পাঁচশ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের ধান আবাদ হয়েছে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে। আগাম জাতের ধান কাটামাড়াই শেষে ওই জমিতে আলু আবাদ করছে কৃষক। গত বছর ২৩ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়েছিল। এবারো ওই পরিমান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কেরামত আলী বলেন,‘আবহাওয়া অনুুকুলে রয়েছে আগাম আলু আবাদের জন্য। বীজ রোপণের পর ৬০ দিনের মধ্যে আলু উঠানো যায়। আগাম আলু চাষে এলাকার কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলায় আগাম আলুর চাষ হচ্ছে। এ পর্যন্ত জেলায় চার হাজার হেক্টর জমিতে আগাম আলু লাগানো হয়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এ আলুর বাজার রয়েছে।’
B/S/S/N