ডেস্ক রির্পোটঃ  শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, কর্মকর্তাদের সহনীয় মাত্রায় ঘুষ নিতে বলা প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য খন্ডিতভাবে প্রকাশ করে বিভ্রান্তি ছাড়ানো হচ্ছে।

আজ বুধবার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সম্প্রতি কতিপয় গণমাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য ভিন্নভাবে প্রকাশ করার বিষয়ে জবাব দিতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে তার ওই বক্তব্যের ব্যাখ্যা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে শিক্ষা ব্যবস্থা ঘুষ আর দুর্নীতিতে ছিল আকণ্ঠ নিমজ্জিত। উদাহরণ হিসেবে আমি তো সেসব পরিস্থিতি তুলে ধরেছিলাম। অথচ কতিপয় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় আমার বক্তব্য খন্ডিতভাবে প্রকাশিত করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত বিভিন্ন দফতর, অধিদফতর ও সংস্থাসমূহের মধ্যে ভাবমূর্তির দিক থেকে দুর্নীতিতে সবচেয়ে ঊর্ধ্বে ছিল পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। সে বিষয়গুলো তুলে ধরতে আমি সেদিন কিছু বিষয় তুলে ধরেছিলাম।’

কতিপয় গণমাধ্যমে খন্ডিতভাবে বক্তব্য প্রকাশ হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে দাবি করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর শিক্ষা ভবনের একটি অনুষ্ঠানের সংবাদ বেশিরভাগ গণমাধ্যমে যথোপযুক্তভাবে তুলে ধরা হলেও কতিপয় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ায় আমার বক্তব্য খন্ডিতভাবে প্রকাশিত হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সেই বিভ্রান্তির ওপর ভিত্তি করে কতিপয় বিশিষ্টজন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মতামতও জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এই বিষয়টি স্পষ্ট করতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিশিষ্টজনদের কেউ কেউ কতিপয় মিডিয়ায় প্রকাশিত খন্ডিত-ভিত্তিহীন সংবাদের ওপর ভিত্তি করে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলছেন। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আমার দীর্ঘদিনের সততার সংগ্রাম, নীতি-আদর্শ, কর্তব্যনিষ্ঠা, দায়িত্ববোধের বিষয়ে আপনারা অবগত। মিডিয়ার খন্ডিত, ভিত্তিহীন সংবাদের ওপর ভিত্তি করে মন্তব্য করার আগে সরাসরি আমাকে প্রশ্ন করলে অনেক বেশি খুশি হতাম।’

বর্তমান সরকারের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে শিক্ষা খাতের দুর্নীতি অনেক কমেছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপের ফলে শিক্ষা খাতের দুর্নীতি বিশ্বের তুলনায় অনেক কমেছে। বিশ্বে শিক্ষাক্ষেত্রে গড় দুর্নীতির হার ১৭ ভাগ হলেও বাংলাদেশে তা ১২ ভাগ। আমরা এ হারকে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে কাজ করে চলেছি। বেশ কটি দপ্তর, পরিদপ্তর ইতোমধ্য স্বচ্ছতা এসেছে, দুর্নীতিমুক্ত হয়েছে। ঘুষ-দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত আছে এবং থাকবে।’

নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলাম। সেখানে বলেছিলাম- আমাদের সম্পদ কম, যতটুকু সম্পদ আছে, তার সবটুকু সুষ্ঠুভাবে কাজে লাগাতে হবে। দুর্নীতি-অপচয় ও অপব্যয় বন্ধ করতে হবে। এক টাকা দিয়ে দুই টাকার কাজ করতে হবে। সেই ধারাবাহিকতায় অব্যাহতভাবে নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।’

২৪ ডিসেম্বরের অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যের সূত্র তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দফতর, সংস্থাগুলোর মধ্যে ভাবমূর্তির দিক দিয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে ছিল পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর (ডিআইএ)। কর্মকর্তারা ঘুষ-দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত ছিলেন। এ সবই আগের বিএনপি-জামায়াত সরকারের অপশাসনের ফসল। সেই সময় ডিআইএ কর্মকর্তারা অসহায় শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকার ঘুষের খাম গ্রহণ করার সময় বলত, এর ভাগ ওপরেও দিতে হয়। স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষক-কর্মচারীরা মনে করত, অফিসাররা চোর, মন্ত্রীও চোর।’

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে শিক্ষা খাতের অনেক অর্জন যেমন রয়েছে, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন নিশ্চিত করাসহ বেশকিছু ক্ষেত্রে এখনও চ্যালেঞ্জ আছে। সব ক্ষেত্রে আমরা দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে চাই। আমি আপনাদের সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।’

 

 

 

B/S/S/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে