ভারতে আগের দিনের চেয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সংক্রমিত রোগী শনাক্তের সংখ্যা আরও কমছে। গত ১ এপ্রিলের পর গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে সবচেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছে। তবে আগের দিনের চেয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় মৃত্যু বেড়েছে। আজ সোমবার এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ৭০ হাজার ৪২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার) ৮০ হাজার ৮৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় ৩ হাজার ৯২১ জন মারা গেছেন। আগের ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার) মারা যান ৩ হাজার ৩০৩ জন।

সবশেষ এই তথ্য নিয়ে ভারতে করোনায় সংক্রমিত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৯৫ লাখ ১০ হাজার ৪১০। মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৩০৫।

ভারতে টানা সাত দিন ধরে ৫ শতাংশের নিচে করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ।

দেশটিতে শুক্রবার শনাক্ত হয় ৮৪ হাজার ৩৩২ জন। মারা যান ৪ হাজার ২ জন। বৃহস্পতিবার ৯১ হাজার ৭০২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। মারা যান ৩ হাজার ৪০৩ জন। বুধবার শনাক্ত হয় ৯৪ হাজার ৫২ জন। মারা যান ৬ হাজার ১৪৮ জন। মঙ্গলবার ৯২ হাজার ৫৯৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। মারা যান ২ হাজার ২১৯ জন। গত সোমবার ৮৬ হাজার ৪৯৮ জনের শনাক্ত হয়। মারা যান ২ হাজার ১২৩ জন।

দেশজুড়ে প্রবল সমালোচনার মুখে ১৮ বছরের বেশি বয়সী সবাইকে বিনা মূল্যে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ২১ জুন থেকে এ লক্ষ্যে সব রাজ্য সরকারকে বিনা মূল্যে টিকা সরবরাহ করা হবে। করোনা পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষাপটে ১ মে থেকে সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে (১৮ বছরের ঊর্ধ্বে) টিকাদানের কর্মসূচি হাতে নেয় ভারত।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানলে প্রায় দুই মাস আগে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। এখন সংক্রমণ কমতে থাকায় কোথাও কোথাও সতর্কতার সঙ্গে বিধিনিষেধ শিথিল করা হচ্ছে।

গত মার্চের মাঝামাঝিতে ভারতে এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২০ হাজারের কাছাকাছি। তারপর দেশটিতে সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়তে থাকে। গত মাসে ভারতে এক দিনে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ১৪ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়।

গত ৪ এপ্রিল ভারতে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটির মাইলফলক ছাড়ায়। গত ২৩ মে করোনায় মৃত্যু তিন লাখের মাইলফলক ছাড়ায়।

৩০ এপ্রিল ভারতে প্রথম এক দিনে চার লাখের বেশি মানুষের করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। তারপর একাধিক দিন দেশটিতে চার লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হন।

৭ মে ভারতে প্রথম এক দিনে করোনায় চার হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তারপর একাধিক দিন দেশটিতে চার হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। ৯ জুন দেশটিতে রেকর্ড ৬ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।

বিশ্বের কোনো দেশে এক দিনে সর্বোচ্চসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্তের রেকর্ড ভারতের দখলে। ২২ এপ্রিলের আগপর্যন্ত এ রেকর্ড যুক্তরাষ্ট্রের দখলে ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে গত জানুয়ারিতে এক দিনে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

ওয়ার্ল্ডোমিটারস শুরু থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের করোনাবিষয়ক হালনাগাদ তথ্য দিয়ে আসছে। ওয়ার্ল্ডোমিটারসের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পরই রয়েছে ভারত। ভারতের পর রয়েছে ব্রাজিল। আর মৃত্যুর দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পরই রয়েছে ভারত।

ভারতে সংক্রমণ ‘বিস্ফোরণের’ জন্য করোনার ভারতীয় ধরনকে অনেকাংশে দায়ী করা হয়। করোনার ভারতীয় ধরনগুলোর মধ্যে একটিকে ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে বিবেচনা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

Pr/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে