দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (২৮ জুলাই সকাল ৮টা থেকে ২৯ জুলাই সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ১৯৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৮১ জনই রাজধানীর। ঢাকার বাইরে ১৩ জন। বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল বুধবার ১৫৩ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চলতি বছরে এটি একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী ভর্তির রেকর্ড।এছাড়া বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ৬৪২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে সর্বমোট ভর্তি রোগী ৬১৮ জন এবং অন্যান্য বিভাগে ভর্তি রয়েছেন ২৪ জন।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত দেশে সর্বমোট ডেঙ্গু রোগী ২ হাজার ২৯২ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৬৪৬ জন। কোভিড পরিস্থিতিতে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য কয়েকটি হাসপাতাল নির্দিষ্ট করে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চলতি সপ্তাহেই আবারও রাজধানীতে শুরু হচ্ছে মশক নিধন অভিযান।চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু সন্দেহে ৩টি মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেলেও এখনও কোনো মৃত্যুই ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেনি আইইডিসিআর।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে আবাসস্থল নিয়মিত পরিষ্কার রাখার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, এডিস মশা যেহেতু অভিজাত এলাকায়, বড় বড়, সুন্দর সুন্দর দালান কোঠায় বসবাস করে ও সেখানে থাকা স্বচ্ছ পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে তাই এসব আবাসস্থল নিয়মিত পরিষ্কার রাখা এ রোগের বিস্তার রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ।আর মশার আক্রমণ থেকে বাঁচতে ঘরের দরজা ও জানালায় মশারির নেট লাগানোর ওপর জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রয়োজনে দিনের বেলায় অবশ্যই মশারি টাঙ্গিয়ে বা কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।প্রতিবছর বর্ষাকালেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ দেখা দেয়। ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়েছিল।দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০০ মানুষ প্রাণ হারান। তবে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ১৭৯।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, ওই বছর সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন।ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণসমূহ:১। প্রচণ্ড জ্বর২। তীব্র মাথাব্যথা৩। বমি৪। শরীরে লাল র্যাশ ওঠা৫। মাংসপেশীতে ব্যথা৬। চোখের পেছনে ব্যথাডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়:১। মশার প্রজনন স্থল ধ্বংস করা।২। ঘর ও আশপাশের যে কোনো পাত্রে বা জায়গায় জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা যাতে এডিস মশার লাভা বিস্তার না করতে পারে।৩। ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, নারকেলের মালা, কনটেইনার, মটকা, ব্যাটারি সেল ইত্যাদি প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করা; যাতে এডিস মশা বিস্তার না করতে পারে।৪। রাতে বা দিনে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা।৫। স্বাস্থ্যকর পরিবেশ স্থাপন করা।৬। মশা নিধনের ওষুধ, স্প্রে কিংবা কয়েল ব্যবহার করা।৭। জানালাতে মশা প্রতিরোধক নেট ব্যবহার করা।
SO/N