দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্যের (২৫) গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। সাম্য সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের সড়াতৈল গ্রামের ফখরুল আলম ফরহাদের ছেলে।
সাম্যের হঠাৎ এমন মৃত্যু যেন কেউই মেনে নিতে পারছেন না। গ্রামের বাড়িতে লাশ কখন আসবে এ অপেক্ষায় রয়েছেন তার স্বজনরা।
বুধবার তার গ্রামের বাড়িতে স্বজনের আহাজারি ও গ্রামবাসীর আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে সাম্যের মৃত্যুর খবর পান তারা।
নিহত শাহরিয়ার আলম সাম্যের মা কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনিই সবার ছোট।
সাম্যের বড় চাচা ডা. কাউসার আলম জানান, সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। বাকি তিন ভাতিজা বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত। ওরা সবাই ঈদ ও বিশেষ কোনো আয়োজনে গ্রামে আসত। রাত ১টার দিকে জানতে পারি সাম্যকে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খুন করা হয়েছে। জানি না কোন অপরাধে আমার ভাতিজাকে খুন করা হলো। এ মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর আত্মীয়স্বজন অনেকেই ঢাকায় চলে গেছেন।
সাম্য হত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, সাম্য উল্লাপাড়া মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলের অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। যে কারণে পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়। ওখানে ভর্তি হয়ে ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত ছিলেন বলে তিনি জানান।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মুক্তমঞ্চের পাশ দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলেন সাম্য। এ সময় আরেকটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং ধস্তাধস্তি হয়। এরই একপর্যায়ে সাম্যকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান পায়ে আঘাত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে রাত ১২টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় সাম্যকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, সাম্যের বাবা ফকরুল আলম ফরহাদ ঢাকার মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার একটি বহুতল ভবনের সপ্তমতলায় পরিবার নিয়ে থাকেন। গ্রামের বাড়িতে থাকেন শাহরিয়ারের চাচারা।
শাহরিয়ারের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তার প্রথম জানাজা হয়। পরে মরদেহ আনা হবে সিরাজগঞ্জের সড়াতৈল গ্রামের বাড়িতে। স্থানীয় মাঠে জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানেই তাকে দাফন করা হবে।
jug/n