কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী; শুধু স্কুল নয় যেন একটি জ্ঞানের পাঠশালা পিতৃ¯েœহে কোমলমতি শিশুদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর হেদায়েত হোসেন। তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের শরীফাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। শুধু শিক্ষকই নন, তিনি একজন অভিভাবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ৩শতাধিক কোমলমতি শিশুর।
জানাগেছে ১৯ মার্চ ২০২৪ ইং সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন অত্র বিদ্যালয়ে, এর আগে তিনি গনেশ আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালনকালে অনেক উন্নয়নমুলক কাজ করেছেন। শরীফাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসার পর থেকে বিদ্যালয়টিতে লেখাপড়ার মানোন্নয়ন করার লক্ষ্যে নানা চিন্তা-চেতনা মাথায় নেন।
এছাড়া বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বেশী শ্রেণিকক্ষ অনেক হওয়ায় প্রথমে তিনি সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসেন পুরো বিদ্যালয়টিকে। পরে ধীরে ধীরে বিদ্যালয়টিকে নান্দনিক রুপদিতে নানা কর্মসুচি হাতে নেন তিনি, যেমন মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব স্থাপন, শিশুদের খেলাঘর, লাইব্রেরী, বিতর্ক পরিষদ,ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, সততা স্টোর, নীতিবাক্য চর্চা, জ্যামিতিক আকৃতি চত্বর, সবজি বাগান, ফুলবাগান, ছাদ বাগানসহ নানা দৃষ্টিনন্দন কাজ করছেন। বিদ্যালয়টি উপজেলার অন্যান্য বিদ্যালয়ের চেয়ে ব্যতিক্রমধর্মী হওয়ার ফলে ঝড়ে পড়া শিশুরা এখন বিদ্যালয়মুখী হচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকসহ ১০জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও ইদানিং একজন সহকারী শিক্ষক অন্যত্রে বদলী হয়ে গেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেদায়েত হোসেনের সাথে কথা হয়, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ১৭৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে শরীফাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ব্যতিক্রম হওয়ার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি নিজেও এই বিদ্যালয়ের একজন ছাত্র সেই থেকে আমার স্বপ্ন এই বিদ্যালয়টিকে একটি আদর্শ বিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলা। চাইলেও সবকিছু কাজ একার পক্ষে করা সম্ভব হয়ে উঠেনা। তাই স্থানীয় যারা বিদ্যোৎসাহীসহ অভিভাবকদের নিয়ে আমি বসেছিলাম তাদের স্বপ্নের কথা আমি শুনেছি আমার স্বপ্নের কথা তাদেরকে শুনিয়েছি তার পর ধীরে ধীরে কাজ শুরু করি।
তিনি আরো জানান সেখানে একটি ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব খুলেছি, সেই দিক থেকে ভাষা একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় সেটি বাংলা কিংবা ইংরেজী হউক, শিশুদের শুদ্ধ এবং সুমধুর ভাবে বাংলা ভাষা শেখানো হয়। উপস্থাপন কিভাবে করতে হবে. উপস্থিত বক্তিতা কিভাবে দিতে হবে, ইংরেজীতে নিজেকে কিভাবে উপস্থাপন করতে হবে, সেগুলো বিষয়ে আমরা অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে থাকি। এছাড়াও হাতের লেখা ভাল করার জন্য আমরা নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। আর একটি বিষয় হচ্ছে বর্তমান যে বিশ্ব, সেখানে টিকে থাকার জন্য প্রযুক্তিগত জ্ঞান অবশ্যই দরকার। প্রাথমিক স্তরে সেই জ্ঞান অর্জন করতে না পারলে পরবর্তী সময়ে তা কঠিন হয়ে যায়। সেই কারনে আমরা বিদ্যালয়ে আইসিটি ল্যাব স্থাপন করেছি যাতে করে শিশুরা কম্পিউটার ল্যাবে বসে প্রযুক্তি ও কম্পিউটারের জ্ঞানটি অর্জন করতে পারে। তাই এভাবে আমরা এগিয়ে চলছি আশা করি আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন।
আমরা যে যে স্বপ্নটি দেখি আগামীতে বিদ্যালয়টিকে একটি আদর্শ বিদ্যালয়ে পরিনত করা এবং বিদ্যালটি বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে পরিনত করার জন্য আমার সহকারী শিক্ষকরা সবাই মিলে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। বিদ্যালটিকে নান্দনিক করার জন্য আরো অনেক গুলো পদক্ষেপ আছে সেগুলোতে আমরা ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছি। আমি সবসময় কাজ করতে ভালবাসি শিশুদের সাথে আমার কাজ করতে ভাল লাগে। এছাড়া কাজের মাধ্যমে বেঁচে থাকা যায়,কাজের মধ্যে যে আনন্দ আছে, সেটি অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না।
এসব কাজ করতে গিয়ে অনেক সাপোর্টের প্রয়োজন হয় সেগুলো পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,শুধু কাজ করতে চাইলে তো হবে না,এখানে সামর্থের প্রয়োজন আছে, আমরা দেখছি যে, বিগত কয়েকটি অর্থবছরে খুব বেশি বরাদ্দ স্কুল গুলোতে আমরা পাইনি খুব সীমিত বরাদ্দ পেয়েছি এবং ¯িøপ ফান্ডের যে মোটা অঙ্কের বরাদ্দ আমরা পেয়ে থাকি ৫০% বা ৭৫% পাচ্ছি।
সেটার সাথে যে আমাদের প্রান্তিক মূল্যায়ন গুলো রয়েছে এখান থেকে নির্ভর করা একটা বিষয় আছে সেক্ষেত্রে বিদ্যালয় উন্নয়ন পরিকল্পনার যে, কাজ গুলো আছে সেখানে সরকারি ফান্ডের টাকা দিয়ে ওভাবে করা সম্ভব হয়ে উঠেনা। সেগুলো খুব ধীর গতিতে করতে হয়। আমি এটার জন্য মনে করি স্থানীয় জনগন ও সেখানকার দাতা সদস্যরা মুখ্য ভুমিকা পালন করবে। এছাড়াও অত্র বিদ্যালয়ের যারা ডোনার তাদেরকে নিয়ে আমি কয়েক দফা মিটিং করেছি। এছাড়া যারা অত্র বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা ভাল-ভাল জায়গায় রয়েছে তাদের সাথে আমি যোগাযোগ করেছি তাদের কাছে আমি পরামর্শ নিয়েছি এবং প্রাক্তন ছাত্রদের নিয়ে আমি একটি গ্রুপ খুলেছি। তারা এখানে অনুপ্রানিত হয়েছে এবং আস্থা রাখছে যার ফলে এই কাজ গুলো তারা আমাকে যচেষ্ট সহযোহিতা করছে। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমীন এর সাথে মুঠো-ফোনে কথা হলে তিনি বলেন বিদ্যালয়টি আমরা নিয়মিত পরিদর্শন করে থাকি সরকারি যা বরাদ্দ আসে সেগুলো সেগুলো পেয়ে থাকে এছাড়া বিদ্যালয়টিতে একটি ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনের জন্য আমরা কর্তৃপক্ষের নিকট তালিকা পাঠিয়েছি।