বিডি নীয়ালা নিউজ(৩১ই মার্চ১৬)-ঠাকুরগাঁও প্রতিবেদনঃ ঠাকুরগাঁওয়ের ভন্ডগ্রাম হাই স্কুলের অন্তঃসত্বা ছাত্রী হত্যার ঘটনায় ওই স্কুলের পিয়ন আমিরুল ইসলামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। সেই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক গোলাম আহম্মেদ খলিলুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আমিরুল ইসলাম (৩৪) ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ভন্ডগ্রাম মধ্যপাড়া গ্রামের আবদুস সোবহানের ছেলে। সে ওই স্কুলের পিয়ন পদে চাকরি করতেন।
রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এন্তাজুল হক বাবু জানান, পুতুল বালা ২০০৬ সালের এসএসসি পরীক্ষার নির্বাচনী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় ওই বছর পরীক্ষা দিতে পারেনি। ওই সময় তার স্কুলের পিয়ন আমিরুল ইসলাম তাকে পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে অবৈধ শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তোলে।
এক পর্যায়ে পুতুল বালা অন্ত:সত্তা হয়ে পড়লে সে আমিরুলকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু আমিরুল তাতে সাঁয় না দিয়ে উল্টো তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে ২০০৬ সালের ৬ মে রাতে আমিরুল পুতুল বালাকে সবার অগোচরে বাড়ি থেকে ডেকে বাড়ির পাশের একটি ধানক্ষেতের ভেতর নিয়ে গিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
পরদিন সকালে স্থানীয়রা ধানক্ষেতের ভেতর পুতুল বালার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। এ ঘটনার পর দিন ৮ মে পুতুল বালার বাবা গনেস বর্মন অজ্ঞাতনামা আসামি করে রাণীশংকৈল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে স্কুলের পিয়ন আমিরুল ইসলামই অন্তসত্তা অবস্থায় পুতুল বালাকে হত্যা করেন। পরে পুলিশ তাকে আটক করে ২০০৯ সালের ৩০ জুন তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মামলাটি ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা জজ আদালতে চলমান থাকায় বিচার কাজ শেষ হচ্ছিল না। পরে গত বছরের ডিসেম্বরে মামলাটি রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। এর পর হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১০ বছর পর ঠাকুরগাঁওয়ের চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ সাজা আশা করেছিলাম। কিন্তু আদালত যাবজ্জীবন দিয়েছেন। তারপরেও আমরা সন্তুষ্ট।’