মোঃ মোমিন ইসলাম দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি: দেবীগঞ্জ পৌর সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে অতিরিক্ত ধুলোবালির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতিদিনই সড়কে উড়ছে ধুলোবালি, যা বাতাসকে দূষিত করছে এবং পথচারীদের শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অব্যবস্থাপনার কারণে মহাসড়কে ধুলোবালির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। সড়কের কার্পেটিং ও মেকাডম উঠে গিয়ে ধুলোবালি সৃষ্টি হয়েছে, যা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের পাকুড়ী তলা, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এবং আব্দুলপুর পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটারজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।স্থানীয় পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, সড়ক বিভাগের দায়িত্বহীনতার কারণেই এই দূষণ বেড়েছে, তবে এখন পর্যন্ত ধুলোবালি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত বালুবাহী ড্রাম ট্রাক ও ইটবাহী মাহিন্দ্রা চলাচল করছে, যা ধুলোবালির মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এসব যানবাহন চলাচলের সময় প্রচুর পরিমাণে বালু সড়কে পড়ে, যা বাতাসে মিশে জনস্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলছে।
"অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালুবাহী ট্রাক, ইটবাহী ট্রলি ও পিকআপ চলাচলের কারণেই পৌর সদরের সড়কগুলো ধুলোবালিতে একাকার হয়ে গেছে। মানুষ শ্বাসকষ্টসহ নানা সমস্যায় ভুগছে।
ধুলোবালির কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দেবীগঞ্জ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার জানান,
"বাতাসে অতিরিক্ত ধুলোবালি থাকার কারণে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে হাঁপানি, সর্দি-কাশি, ফুসফুসজনিত সমস্যার প্রকোপ বাড়ছে।
"মোটরসাইকেল চালানোর সময় ধুলো গায়ে এসে পড়ে, চোখ জ্বালাপোড়া করে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। সড়কের ধুলোবালির কারণে জামাকাপড় নষ্ট হয়ে যায়, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
স্থানীয়রা দাবি করছেন, পৌর কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। ধুলোবালি নিয়ন্ত্রণে সড়ক সংস্কার, নিয়মিত পানি ছিটানো এবং ট্রাকগুলোকে বালুর ওপর ঢেকে চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
জমির উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাঈম বলেন, প্রশাসনের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে শিক্ষার্থীরা ও সাধারণ মানুষ এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পায়।
দেবীগঞ্জ পৌর সদরের এই ধুলোবালির দূষণ জনজীবনের জন্য এক ভয়াবহ সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের অবহেলা ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সাধারণ মানুষকে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শ্বাসতন্ত্রের রোগ ও পরিবেশগত সমস্যা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।