প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে টিকাদান কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন ।
পর্যায়ক্রমে সারাদেশে এই টিকা প্রদান করা হবে, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ সময় এই টিকার মাধ্যমে দেশ শিগগিরই করোনামহামারী থেকে মুক্তি পাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি আজ বিকেলে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভার্চ্যুয়ালি সংযুক্ত হয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সামনেই নার্স, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও সেনাসদস্যসহ ৫ জন করোনা টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেন। প্রথম টিকা নেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরোনিকা কস্তা।
উদ্বোধনের পরপরই সারাদেশে টিকা প্রদানের নিবন্ধনের জন্য অনলাইন ‘সুরক্ষা’ অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম চালু করা হয়েছে (www.sorokkha.com.bd)| ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখ থেকে দেশব্যাপী ব্যাপকহারে টিকা দান কর্মসূচি শুরু হবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পর্যায়ক্রমে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) ও মুগদা হাসপাতালে ২৮ জানুয়ারি থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এসব হাসপাতালের ৪শ থেকে ৫শ’ স্বাস্থ্যকর্মীকে সবার আগে টিকা দেওয়া হবে। টিকা দেওয়ার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে প্রতিটি হাসপাতালেই আলাদাভাবে চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
এদিন প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্যের প্রশ্নের উত্তরে করোনা ভ্যাকসিন প্রাপ্তির অগ্রাধিকার তালিকা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা’র (ডব্লিউএইচও) সাইন্টিফিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অব এক্সপার্ট (এসএজিই)এর নির্দেশনা ও দেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদানের অগ্রাধিকার তালিকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভ্যাকসিন বিতরণের প্রথম পর্যায়ে দেশের মোট জনসংখ্যার ১ কোটি ৫০ লাখ (৮ দশমিক৬৮ শতাংশ) লোককে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মোট ২ ডোজ করে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। দেশের ৬৪ জেলার ইপিআই স্টোরে এই ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হবে।
চুক্তি অনুযায়ী সেরাম ইনস্টিটিউট ইন্ডিয়া থেকে প্রায় ৩ কোটি বা ততোধিক ডোজ ভ্যাকসিন ৬টি ধাপে সরাসরি বাংলাদেশের নির্ধারিত জেলার ইপিআই কোল্ড স্টোর সমূহে পৌঁছনোর দায়িত্ব পালন করবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
ইতোমধ্যে ভারতের উপহার হিসেবে ২০ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ক্রয়কৃত ৫০ লাখ করোনার টিকা গত ২৫ জানুয়ারি ঢাকা পৌঁছেছে এবং এই ৭০ লাখ টিকা বিতরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সেরামের সঙ্গে চুক্তি অনুাযায়ী আগামী ৬ মাসের মধ্যে সকল টিকার সরবরাহ পাওয়া যাবে।
এদিন প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বটি টেবিলে উত্থাপিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এদিন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৭ জন টিকা গ্রহণ করেন। যারা সকলেই সুস্থ আছেন। ইতোপূর্বে টিকার প্রতিটা লটের নমুনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করে টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়। সেইসাথে টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে হাসপাতালের চিকিৎসাকর্মীসহ প্রায় ১শ’ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
BSSN