ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের সরকারী হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদী একটি সংগঠনের হামলা প্রতিবাদে ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি নামে একটি সংগঠন। এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরের পর থেকে ভারতীয় দূতাবাসের আশপাশের বিভিন্ন রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
বিশেষ করে রাজধানীর শাহজাদপুর বাঁশতলায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে। বাঁশতলা থেকে ভারতীয় দূতাবাসগামী রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছেন টাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের পুলিশ সদস্যরা।
তাদের পেছনে রয়েছেন এপিবিএন সদস্যরা। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর সদস্যরাও এ এলাকায় মোতায়েন রয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশতলা থেকে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখী রাস্তায় কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের যেতে দেওয়া হলেও করা হচ্ছে তল্লাশি।
এ বিষয়ে গুলশান বিভাগ পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগরতলায় ঘটে যাওয়া হামলার ঘটনার প্রতিবাদে একটি সংগঠন ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। এজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) তারেক মাহমুদ বলেন, গতকাল আগরতলায় যে হামলার ঘটনা ঘটেছে এর প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি নামে একটি সংগঠন আজ ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। এর পরিপেক্ষিতে দূতাবাস এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংগঠনটির একটি ফটোকার্ড পোস্ট এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে। ওই ফটোকার্ডে দেখা যায়, বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি নামে সংগঠনটি ভারতের আধিপত্যবাদী আচরণ ও আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
এর আগে, গতকাল সোমবার রাত থেকে ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি বিভাগ।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় ‘হিন্দু সংগ্রাম স্মৃতি সংস্থা’ নামে ভারতের উগ্রপন্থী একটি সংগঠন। আগরতলার সার্কিট হাউসে অবস্থিত গান্ধী মূর্তির সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। পরে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ছয়জনের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করে।
এক পর্যায়ে সমিতির বিক্ষুব্ধ সদস্যরা সহকারী হাইকমিশনের ভেতরে প্রবেশ করে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলেন এবং সেই পতাকা ছিঁড়ে ফেলেন। পরে ভবনের সামনে থাকা সাইনবোর্ড ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেন।
RT/N