Monday, 10 March 2025, 02:07 PM

দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন

বিডি নীয়ালা নিউজ(১৩জানুয়ারি১৬)- অনলাইন প্রতিবেদনঃ পৌরসভা নির্বাচনের পর এবার রাজনৈতিক দলের পরিচয় ও প্রতীকে দেশের চার হাজারের বেশি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আগামী মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ শুরু হবে।

নির্বাচন কমিশন গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর জন্য নির্বাচন পরিচালনা বিধি ও আচরণবিধির খসড়াও নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়েছে।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ রাজনৈতিক দলগুলো দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। পৌর নির্বাচন শেষ করে বড় দল দুটি ইউপি নির্বাচনের জন্য মাঠপর্যায়ে কাজও শুরু করেছে বলে দল দুটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা জানান।

স্থানীয় সরকারের সর্বনিম্ন স্তর ইউনিয়নে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিষয়ে অভিজ্ঞরা গত পৌর নির্বাচনের উদাহরণ টেনে বলছেন, দলীয় প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচন গ্রাম পর্যায়ে হানাহানি বাড়াতে পারে।

আইন অনুযায়ী, পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ইউপিতে নির্বাচন করতে হয়। এই হিসাবে এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে চার হাজারের বেশি ইউপির মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে। এ জন্য কমিশন সময় হাতে রেখে আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করে মার্চে ভোট গ্রহণ শুরু করতে চায়।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, আইনি বাধ্যবাধকতার কারণেই প্রথম ধাপের নির্বাচন মার্চের মধ্যে শেষ করতে হবে। এরপর ধাপে ধাপে জুনের মধ্যে বাকি ইউপিতে নির্বাচন করা হবে। সে অনুযায়ী কমিশন প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছে। তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচন দলীয়ভাবে হবে, তাই নির্বাচন পরিচালনা বিধি ও আচরণবিধি নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে বিধি চূড়ান্ত করে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

নারী প্রার্থীর প্রতীক: নারীদের জন্য সংরক্ষিত সদস্য পদের (মেম্বার) নির্বাচনে প্রতীক হিসেবে এবার হেলিকপ্টার, ক্যামেরা, বই, কলম, তালগাছ, মাইক, জিরাফ, বক ও সূর্যমুখী ফুল প্রস্তাব করা হয়েছে। পৌর নির্বাচন ও এর আগে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নারী প্রার্থীদের জন্য চুড়ি, ফ্রক, পুতুল, ভ্যানিটি ব্যাগ ইত্যাদি প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছিল। তখন নারী নেত্রীসহ সমাজের সচেতন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং আপত্তি ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এসব প্রতীকের মাধ্যমে নারীর ব্যক্তিত্ব ও সম্মানকে ক্ষুণ্ন করার দায় পড়ে কমিশনের ওপর। তাই কমিশন ইউপি নির্বাচনের বিধিতে নতুন প্রতীক প্রস্তাব করেছে।


এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, সচেতন সমাজ প্রতিবাদ করাতেই নির্বাচন কমিশনের বোধোদয় হয়েছে। তারা সুন্দর সুন্দর প্রতীক দিতে যাচ্ছে। সমাজের অন্যান্য বিষয়েও সচেতন মহলকে এভাবে সোচ্চার হতে হবে।

রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া: জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, নির্দলীয় নির্বাচন কেবলই আলোচনা। বাস্তবে নির্বাচন দলীয়ভাবেই হবে এবং তা মার্চে শুরু হবে। এই হিসাব কষে আওয়ামী লীগ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি আগেই নেওয়া আছে।

বিএনপিও দলীয় পরিচয়ে নির্বাচন করার পক্ষে। দলটি মনে করে, ইউপিতে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলে মাঠপর্যায়ে দলের সাংগঠনিক ভিত মজবুত হবে এবং বিএনপির চলমান আন্দোলন বেগবান হবে। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করে, নির্বাচনের মাধ্যমে গড়ে তোলা সাংগঠনিক ভিত আগামী সংসদ নির্বাচনে ইতিবাচক ফল দেবে।’

বিশেষজ্ঞরা যা বললেন: সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলে যে পরিমাণ সংঘাত ও হানাহানি হবে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে। এই হানাহানি গ্রামের সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধকে আঘাত করবে।

// Disable right-click context menu // Disable text selection // Disable dragging of images and text // Disable copy events // Disable common keyboard shortcuts for copying // Check for Ctrl/Command key combinations with C, X, S, or P