বিডি নীয়ালা নিউজ(৭ই জুলাই ২০১৬ইং)-স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সব দুর্ভোগ, গ্লানি ভুলে উৎসবের আমেজে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছে ।
কোটি কোটি মুসল্লি দীর্ঘ এক মাসের সংযম শেষে বছরের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এ উৎসব ঈদুল ফিতরে উদযাপনের অংশ হিসেবে ঈদ জামাতে শরিক হয়েছে । নামাজ শেষে মোনাজাতে অংশ নিয়ে মহান আল্লার দরবারে বিশ্ব মুসলিমের শান্তির, ঐক্যের ফরিয়াদ জানিয়েছে।
ঢাকায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে, সকাল সাড়ে ৮টায়। এ জামাতে শরিক হন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ, বিচারপতিসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অসংখ্য মুসল্লি।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ৫টি জামাত হচ্ছে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টায়, দ্বিতীয় জামাত হয় সকাল ৮টায়, তৃতীয় জামাত হয় সকাল ৯টায়।
জাতীয় ঈদগাহ, বায়তুল মোকাররমসহ সারাদেশে প্রধান প্রধান ঈদ জামাত ঘিরে নেয়া কঠোর নিরাপত্তা। ঈদ জামাত সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন করতে জেলা, উপজেলা পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারির পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ গঠন করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যায় শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় এবার ৩০ রোজা শেষে ঈদ উদযাপন করছেন বাংলাদেশের মুসলমানরা। এবারের ঈদ উদযাপিত হচ্ছে গত শুক্রবার (১ জুলাই) রাতে গুলশানের অভিজাত হলি আর্টিসান বেকারি রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় দেশি-বিদেশি ২০ জনকে নির্মমভাবে হত্যার শোকের আবহে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে জঙ্গি হামলায় বিদেশি নাগরিকসহ এতসংখ্যক মানুষের প্রাণ হারানোর ঘটনা এটাই প্রথম।
দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। সকাল ১০টায় এই জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।
হিংসা-বিদ্বেষ পেছনে ফেলে ঈদুল ফিতর সবার জন্য আনন্দ বয়ে আনবে বলে প্রত্যাশা করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঈদ উপলক্ষে পৃথক বাণীতে দেশবাসিকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সম্প্রীতির আর সৌহার্দ্যের আহ্বান জানান তারা।
দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
এছাড়া রংপুর, রাজশাহী, চট্রগ্রাম, খুলনা, বরিশাল ও ময়মনসিংহ সহ দেশের সব জায়গায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (৬ জুলাই) মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, জর্ডান, ইরান, ইরাক, মিশর, ইয়েমেন ও লিবিয়ায় ঈদ উদযাপিত হয়। একই দিনে ঈদ উদযাপন করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, এশিয়ার বভিন্ন দেশের মুসলমানরাও।
এদিকে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশেও বিভিন্ন জেলার দেড় শতাধিক গ্রামে বুধবার (৬ জুলাই) ঈদ উদযাপিত হয়েছে।
ঈদের দিন বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, কারাগার, শিশু পরিবার, ছোটমনি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, সেফ হোমস, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টেলিভিশনগুলো ঈদের আগে-পরে কয়েক দিন ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে। সংবাদপত্রগুলো সোমবার (৫ জুলাই)প্রকাশ করেছে ঈদের বিশেষ ক্রোড়পত্র।