Friday, 05 December 2025, 04:07 PM

ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিনের অটল অবস্থানের নেপথ্যে কী

ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা রাশিয়া কখনোই অস্বীকার করেনি। তবে মস্কোর শর্ত মানতেই হবে—এই নীতিতেই অনড় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শর্ত না মানলে বলপ্রয়োগে মানতে বাধ্য করা হবে, এমন অবস্থানই এখন স্পষ্ট।


পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা, সামরিক হুমকি কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের চাপ—সবকিছুকেই পাত্তা না দিয়ে পুতিন অবস্থান ধরে রেখেছেন। তার এই আত্মবিশ্বাসের পেছনে রয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তবতা, কূটনৈতিক সাফল্য এবং শক্তিশালী মিত্রদের সমর্থন।


ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির পর নিরাপত্তার নিশ্চয়তায় পশ্চিমারা বারবার ‘ইচ্ছুকদের জোট’ গঠনের কথা বলেছে। তবে পুতিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—যদি পশ্চিমা সেনা বা শান্তিরক্ষী বাহিনী ইউক্রেনে যায়, তারা বৈধ হামলার লক্ষ্যবস্তু হবে। ভ্লাদিভস্তকে আয়োজিত অর্থনৈতিক সম্মেলনে ব্যবসায়ী ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের সামনে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। করতালিতে ভরা সেই মুহূর্ত যেন তার বক্তব্যকে আরও দৃঢ় করে তুলেছিল।


শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়েও পুতিন এখন সরাসরি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। একসময় যিনি ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নাম উচ্চারণ করতে চাইতেন না, তিনিই এখন বৈঠকে রাজি হয়েছেন। তবে শর্ত একটাই—বৈঠক হবে মস্কোতেই। প্রতিপক্ষের কাছে অগ্রহণযোগ্য হলেও পুতিনের আত্মবিশ্বাসে কোনো ঘাটতি নেই।


ক্রেমলিনের বিশ্বাস, তারা যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নেই। বরং চীন, ভারত ও উত্তর কোরিয়ার মতো দেশগুলোর সমর্থন পুতিনকে আরও দৃঢ় করেছে। সাম্প্রতিক বেইজিং সফরে তিনি এ বার্তাই বিশ্বকে দিয়েছেন।


পুতিন কৌশলে যুক্তরাষ্ট্রকে অবজ্ঞা করে যাচ্ছেন। শান্তি প্রচেষ্টার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশংসা করেছেন, তার আমন্ত্রণে আলাস্কায় বৈঠকেও গেছেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নির্ধারিত সময়সীমা মানেননি। শেষ পর্যন্ত ওয়াশিংটন তার হুমকি কার্যকর করতে পারেনি। ফলে পুতিনের কাছে এটা প্রমাণিত যে যুক্তরাষ্ট্র কেবল চাপের ভাষা ব্যবহার করছে, বাস্তবে কিছু করতে পারছে না।


সম্প্রতি পুতিন বলেছেন, তিনি ‘সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে আলো দেখতে পাচ্ছেন।’ তবে ইউক্রেন, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার অবস্থান এতটাই ভিন্ন যে মনে হচ্ছে তারা হয় ভিন্ন সুড়ঙ্গে আছে, নয়তো একই সুড়ঙ্গে বিপরীত দিকে এগোচ্ছে।


ইউক্রেন ও তার মিত্ররা যুদ্ধ শেষ করে কিয়েভের নিরাপত্তা ও সামরিক শক্তি নিশ্চিত করতে চায়। অন্যদিকে, রাশিয়ার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো ইউক্রেনকে দুর্বল করা এবং নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করে নতুন এক বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলা।


এই পরস্পরবিরোধী অবস্থান থেকে বোঝা যায়, ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি এখনও অনিশ্চিত, আর উত্তেজনার কাঁটা শিগগিরই কমছে না।


তথ্যসূত্র: বিবিসি

// Disable right-click context menu // Disable text selection // Disable dragging of images and text // Disable copy events // Disable common keyboard shortcuts for copying // Check for Ctrl/Command key combinations with C, X, S, or P