Sunday, 22 December 2024, 09:24 AM

সাফল্যের ১০ মন্ত্র

                                                    এম এম মুজাহিদ উদ্দীন,

জ্ঞানী ব্যক্তিদের মতে, অধ্যবসায়ের মত সুহৃদ,অভিজ্ঞতার মত বিজ্ঞ মন্ত্রদাতা,আত্মবিশ্বাস আর সীমাহীন স্বপ্ন যদি হয় পথ চলার সাথী,তাহলে সাফল্য সুনিশ্চিত।তবে সাফল্য লাভের জন্য প্রয়োজন সঠিক প্রচেষ্টা আর কিছু সাধারণ কৌশল।আমরা প্রায়শই একটা কথা শুনতে পাই-”পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি”।আসলে সৌভাগ্য আর সাফল্য যেটাই বলি না কেন,পরিশ্রমের সাথে সাথে জানতে হয়। সফলতার কিছু কৌশল ।যা অনুসরনে নিশ্চিতভাবে পৌছে যেতে পারেন সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে।যার জন্য প্রয়োজন অন্তত দশটি বিষয়ে নিজের দৃঢ়তাকে অটুট রাখা।

১। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যঃ আমরা বেশির ভাগ মানুষই জানি না যে আসলে আমরা কী চাই বা কোনো চাওয়া নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে সন্তুষ্টি ও অর্জন করতে পারিনা।কোন কাজের লক্ষ্য হতে হবে আপনার একান্ত কাম্য বা গভীর আগ্রহের বস্তু।এই লক্ষ্যই সাফল্যের সিঁড়িতে পৌছাতে সহায়তা করবে।তাই আপনার লক্ষ্যকে মনের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করুন।

২। স্বপ্ন দেখুনঃ বিজ্ঞানী আইনস্টাইন বলেছেন ”জ্ঞানের চেয়ে কল্পনার জোর অনেক বেশি।” তাই আপনার লক্ষ্যকে স্বপ্নে পরিনত করুন। অর্থ্যাৎ আপনি যা হতে চান,তার ছবি যদি স্পষ্টভাবে দেখেন,তাহলে তার বাস্তবায়ন সহজ হবে।আপনার সমস্ত মনোযোগ থাকবে ছবিটার দিকে।দিনে রাতে যখনই সময় পাবেন,তখনই আপনার স্বপ্নের কথা ভাবুন।মনের আঙিনায় স্বপ্নটাকে একেবারে স্পষ্ট করে ফেলুন।যাতে স্বপ্নের পথ ধারে হাঁটতে হাঁটতে আপনি বাস্ববে ও নিজেকে সার্থক হিসেবে দেখতে পান।

৩। আত্নবিশ্বাসঃ সফলতার যদি কোন অন্তরায় থাকে ,তাহলে তা হচ্ছে ,আত্নবিশ্বাসের অভাব।কেউ যদি ভাবে ‘আমি পারবো না’ ব্যস ! নিশ্চিতভাবে সে ব্যর্থ।কারণ ,সে চেষ্টা করেনা না বা করার আগেই আত্নবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে ।বিশ্বাসের মাত্রা হতে হয় খুব দৃঢ়।যদি
মনে বিশ্বাস থাকে অটুট,লক্ষ্য যতই কঠিন হোক না কেন বিজয় নিশ্চিত ।কখনোই বিশ্বাস হারাবেন না।তাহলে আত্মবিশ্বাস নড়বড়ে হয়ে যাবে।ফলে উৎসাহ -উদ্দীপনা কমে যাবে।কাজেই ,বিশ্বাস ধরে রাখুন ।নিজের মাঝে নিজেই প্রতিষ্ঠিত করুন যে ,আমি পারবোই।

৪। সুনিশ্চিত পরিকল্পনাঃ সফলতা অর্জনের জন্য চাই সুনিশ্চিত ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা।যাকে আমরা অন্য কথায় নকশা বা মানচিত্র ও বলতে পারি।এটি ছাড়া আপনি সফল হতে পারবেন না।আপনার বর্তমান অবস্হান ও আপনার কাঙ্ক্ষিত গোলের অবস্হানের দুরত্বটা মাথায় রাখুন।এর মাঝে কিছু বাধা আসতে পারে।বাধাগুলোকে চিহ্নিত করুন।বাধাগুলোকে দূর করার উপায় বের করুন।

৫। সক্রিয় কর্মতৎপরতাঃ দক্ষতা বর্তমানকালে সফলতার অন্যতম নিয়ামক।দক্ষতা ও কর্মতৎপরতার মাঝে সামান্য পার্থক্য আছে।কর্মতৎপরতা হচ্ছে কাজটি সঠিকভাবে করে ফেলা।আর দক্ষতা হলো নিপুনভাবে কাজ করা।মোট কথা,সফল হতে চাইলে দুটোরই প্রয়োজন আছে। অর্থ্যাৎ সফল হতে হলে আপনাকে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজে তৎপর হতে হবে।

৬।সময়ের সঠিক ব্যবহারঃ অনেক ক্ষেত্রে আমরা আজকের কাজ কালকের জন্য ফেলে রাখি।আমাদের টনক না নড়া পর্যন্ত এই কাজটি আমরা বারবার করি।কিন্তু সময় তো আর বসে থাকে না।আমাদের খেয়াল হতে হতে অনেক সময়ের অবমূল্যায়নের ফলে জীবনে নেমে আসে হতাশা আর জীবন সম্পর্কে অনীহা ।আপনাকে মনে রাখতে হবে ,সাফল্যের জন্য সময়ের সঠিক ব্যবহার করা প্রয়োজন।কারণ,সাফল্যের জন্য আপনাকে শিখতে হবে অনেক কিছু ।সব কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করতে হলে সময়কে ভাগ করে নিন।

৭। ইতিবাচক মনোভাবঃ আপনার লক্ষ্যের প্রতি থাকা চাই আপনার ইতিবাচক মনোভাব।এই মনোভাব আপনাকে সাফল্যের দিকে টানবে ।যাদের কোন কাজে মন নেই বা নেতিবাচক মনোভাব আছে তারা সফলতার মুখ দেখতে পাননা।ইতিবাচক মনোভাব হচ্ছে আশা।সৃষ্টিশীলতা আর প্রাপ্তির সীমাহীন সম্ভাবনা।যারা নেতিবাছক চিন্তা করেন,তারা তাদের মনোভাব পরিবর্তন করুন।

৮।যোগাযোগঃবর্তমান সময়ে যোগাযোগের গুরুত্ব অনেক।আর বিজ্ঞানের কল্যাণে মানুষের সাথে মানুষের যোগাযোগ ‍খুব একটা ঝামেলা্ পোহাতে হয়না।তাই মানুায়ের সাথে সম্পর্ক একটা বড় বিষয়।তাই প্রয়োজন সম্পর্ক।

৯।ধৈর্য ও মানসিক প্রশান্তিঃযদি সফল হতে চান,তাহলে আপনাকে অবশ্যই ধৈর্যশীল হতে হবে এবং কাজে মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখতে হবে।ধৈর্যশীলতা আপনাকে নতুন কোন কাজের আগ্রহ জন্ম দেবে এবং প্রশান্তি বজায় থাকলে কাজটি আপনার একঘেঁয়ে মনে হবে না।

১০।মেধা যাচাইঃধরুন আপনি লক্ষ্যে পৌছে গেছেন।ধরেই নিন আপনি সফল।এরপর কী করা উচিত? আপনি কি বসে থাকবেন? তাহলে আপনি ভূল করবেন।কারণ,সাফল্যের শেষ নেই।সাফল্যের একটা সিঁড়ি অতিক্রম করার পর আপনি আরেকটা সিঁড়িতে পা দেবেন।কারন,আপনার মেধার কোনো কমতি নেই।লক্ষ্য অর্জনে মানুষের ক্ষমতার কোন শেষ নেই।তাই নিজের মেধা যাচাই করুন।লক্ষ্য করুনঃ
*কোনো কাজে একবার ব্যর্থ হলে ভেঙ্গে পড়লে চলবে না,পুনরায় চেষ্টা করুন।
*সব সময় ইতিবাচক মানসিকতার অনুশীলন করে তাদের সহচর্য বজায় রাখুন।
*সাফল্যকে একবার করায়ত্ত করলেই দায়িত্ব শেষ নয়।কারণ সাফল্যের শেষ নেই।

লেখক : শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।