৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে 'প্রভুদেশ' ভারতে পালিয়ে যায় গণহত্যাকারী দল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা ও তার দলের অনেক শীর্ষ নেতা। কিন্তু সেখানে চুপ করে বসে নেই তারা। ভারতের ইন্ধনে একের পর এক দেশবিরোধী চক্রান্তের গুটি চালছে পতিত স্বৈরাচার।
দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে চালানো লুটপাট, গুম-খুন, গণহত্যা সহ মানবতাবিরোধী অপরাধের কারণে জনরোষের মুখে প্রকাশ্যে আসতে না পেরে আড়ালে থেকেই একের পর এক দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের কলকাঠি নাড়ছে ফ্যাসিবাদের দোসররা। ইতোমধ্যে আনসার লীগ, রিক্সা লীগ, ব্যাটারি লীগ, বিশ্ববিদ্যালয় লীগ, গার্মেন্টস লীগ, দাবি দাওয়া লীগ, ১৬ বছরের বঞ্চিত লীগ, আফসোস লীগ, আগেই ভালো ছিলাম লীগ সহ নানা রূপে প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় সাধারণ মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলা এই দলটি। সর্বশেষ ২৫ নভেম্বর সারা দেশ থেকে কিস্তি লীগের সদস্যদের এনে সমাবেশ করতেও ব্যর্থ হয় তারা।
গণঅভ্যুত্থানে পরাজয়ের পর প্রথম থেকেই হিন্দুদের নিয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্র করতে থাকে ছাত্র-জনতার খুনি দল আওয়ামী লীগ।অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অস্থিতিশীল করা সেইসাথে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর যে কয়টি অপচেষ্টা হয়েছে তার পেছনে বিতর্কিত ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর সরাসরি ইন্ধন রয়েছে বলে তথ্য আছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার এই আসামি চট্টগ্রামে জমি দখল সাম্প্রদায়িক উসকানিসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের হোতা। এতদিন তাকে দিয়ে পর্দার আড়ালে থেকে কলকাঠি নাড়ছিল আওয়ামী লীগ। ২৫ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে আটক করলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদে বিবৃতি দেয় ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ। প্রকাশ্যে এই হঠকারী বিবৃতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগের মুসলিম ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে বলে মনে করেন নেটিজেনরা। যেকোনো মূল্যে দলমত নির্বিশেষে এই ষড়যন্ত্র প্রতিহতের ডাক উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সোমবার এক বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং অনতিবিলম্বে তাঁর মুক্তি দাবি করেছেন। বিবৃতিটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোনো সভ্য রাষ্ট্রে বিমানবন্দর থেকে কাউকে এভাবে গ্রেফতারের ঘটনা নজিরবিহীন। তাঁকে এভাবে গ্রেফতার করায় আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগ সঙ্গে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অনতিবিলম্বে তাঁর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
নেটিজেনরা বলছেন, আওয়ামী লীগের আমলে দেশের বহু জনপ্রিয় ও শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার, জুলুম নিপীড়ন ও হত্যা করা হলেও প্রতিবাদে একটি বাক্যও খরচ করতে দেখা যায়নি ভারতপ্রেমী দলটিকে। বিতর্কিত ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার একজন আসামিকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানানোকে দেশ ও মুসলিম বিরোধী ষড়যন্ত্রের নীল নকশার একটি অংশ মনে করেন সচেতন মহল। এছাড়াও চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তারের পর দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল পেজে একের পর এক উস্কানিমূলক পোস্ট দেয়া হয়। যা চরমভাবে মর্মাহত করেছে দেশপ্রেমী জনতাকে। এই বিবৃতি নিয়ে খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও অসন্তোষ দেখা গেছে।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। চট্টগ্রামের হাজারি গলিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টার অংশ হিসাবে সহিংসতায় সেনাসদস্য ও পুলিশ বাহিনী সদস্যদের ওপর ভয়ঙ্কর এসিড হামলার নেপথ্যে তার ভূমিকার অভিযোগও রয়েছে। এর আগে চট্টগ্রামর নিউমার্কেট চত্বরে মুক্তমঞ্চে ছাত্র-জনতার উড়ানো জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা উড়িয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননার কথা দেশের স্বাধীনতা, সাবভৌমত্ব ও জাতীয় অখণ্ডতাকে অস্বীকার করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। হাটহাজারীতে জমি দখল, মন্দিরের অভ্যন্তরে অনাথ শিশুদের সাথে অবাধ যৌনাচার ও যৌন হয়রানির অভিযোগও রয়েছে ইসকনের এ বিতর্কিত নেতার বিরুদ্ধে। তার যৌন লালসার শিকার এসব শিশুদের দেয়া বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
আওয়ামী লীগের বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে মোঃ মোস্তফা কামাল লিটন মন্তব্য করেছেন, এদেশে সম্মানিত আলেম ওলামাগণ জেলখানায় বছরের পর বছর জেল খেটেছেন , অনেকে মারা গিয়েছেন তখন একটা বিবৃতি ও দেয়নি। আর এখন ওনার সনাতনি নেতার জন্য মায়া কান্না করতেছে। এগুলো জাতি কখনোই ভুলবে না।
মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান লিখেছেন, একজন অপরাধীর পক্ষ নিয়ে কি বুঝাতে চাচ্ছেন? উনার নামে মামলা আছে তাই গ্রেফতার করেছে।ক্ষমতায় থেকে দেশে যে এতো আলেম উলামাকে নির্যাতন করেছেন, তখন তো কোন বিবৃতি দিতে দেখলাম না। যারা দেশদ্রোহী তারাই ইসকনের পক্ষ নিতে পারে।
মোহাম্মদ নুর আমিন নিপু লিখেছেন, এদের এমন অনুগত্য দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য যেমন ঝুঁকি, তেমনি দেশে থাকা অসংখ নেতাদের ও তাদের পরিবারের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হতে পারে।। তাই আশা করি সব দিক লক্ষ্য রেখেই রাজনৈতিক পরিকল্পনা করবে দলটি।। এমন চাটুকার নেতাদের জন্যই কিন্তু ৫ তারিখ একটি জেলা ছাড়া কোথাও প্রতিরোধ করার মত লোক ছিলো না। যেমনটা ইতিহাস থেকে ১৯৭৫ সালে হয়েছিলো বলে জানা যায়।। তাই অযোগ্য নেতাদের এই সময় আর দায়িত্বে রেখে, দেশের শতশত নেতা কর্মীদের আর বিপদে ফেলিয়েন না।
মোঃ সাইদুর রহমান লিখেছেন, সভ্য রাস্ট্রে রাতের আধারে হেফাজত মারাটা জায়েজ।তাহাজ্জুদের নামাযের পর ভোট দেওয়া জায়েজ।একজন সাবেক রাস্ট্রপ্রধানের বাসার সামনে বালুর ট্রাক রাখা জায়েজ।আওয়ামী ধর্মে সব জায়েজ।
এম সাইফ আল ইসলাম সাইফ লিখেছেন, অপরাধ না থাকা স্বত্বেও হুজুররা যেমন গ্রেফতার হয়েছে তেমনি এ লোক বাদ যাবে কেন?অথচ, এর বিরুদ্ধে স্পষ্ট অভিযোগ আছে।তার অপরাধের শাস্তি তাকে পেতে হবে৷ তোমরা এসব কে ইস্যু করে ফায়দা লুটতে চাও এটা দিনের আলোর মত স্পষ্ট।
মোঃ রায়হান লিখেছেন, এতেই বোঝা যায় এটা কাদের দল। যারা উগ্র সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের হোতা হিন্দুত্ববাদের দোসরদের পক্ষে সাফাই দেয়। আর এ দেশের আলেমের অন্যায়ভাবে দশকের পর দশক নির্যাতন চালিয়ে গেছে।
উজ্জ্বল বাড়েই লিখেছেন, সনাতনীরাই এখন আওয়ামী লীগের ট্রাম্প কার্ড। অথচ আওয়ামী লীগ আমলেও সনাতনীদের উপর অত্যাচার একবারে কম হয়নি; এই অভিযোগ অস্বীকারের সুযোগ নাই।
তবে এক্ষেত্রে মন্দের ভালো আওয়ামী লীগ।
da/iN
Login To Leave a Comment