Thursday, 24 April 2025, 12:47 PM

১২ বছর পর জুনের প্রথম সপ্তাহেই সারাদেশে বর্ষার...

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বা বর্ষা সারাদেশে ইতোমধ্যে বিস্তার লাভ করেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। ২০১০ সালের পর এবার জুনের ১০ তারিখের আগেই সারাদেশে বর্ষা বিস্তার লাভ করেছে।

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে শনিবারও (৪ জুন) চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে অতিভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একই সঙ্গে সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।

শনিবার (৪ জুন) জ্যৈষ্ঠের ২১ তারিখ। বর্ষাকালের বৃষ্টি শুরু হলেও কাগজে-কলমে বর্ষা আসতে এখনো ৯ দিন বাকি।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এবার মোটামুটি স্বাভাবিকভাবেই ৩১ মে বাংলাদেশের উপকূলে পৌঁছায় মৌসুমি বায়ু। গত কয়েক বছরের প্রবণতায় দেখা গেছে মৌসুমি বায়ু সারাদেশে বিস্তার লাভ করতে জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষ কিংবা তৃতীয় সপ্তাহ লেগে যায়।

শনিবার আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর বিস্তার লাভ করেছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর-বঙ্গোপসাগরে তা মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।’

তিনি বলেন, এবার একটু আগেই মৌসুমি বায়ু অনসেট (বিস্তার লাভ করেছে) হয়েছে। ২০১০ সালের পর এবারই আগে অর্থাৎ ১০ জুনের আগে বিস্তার লাভ করেছে। ২০১১ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মৌসুমি বায়ু সারাদেশে বিস্তার লাভ করেছে ১০ জুনের পর।

গত বছর সারাদেশে মৌসুমি বায়ু বিস্তার লাভ করতে ১৭ জুন পর্যন্ত সময় লেগেছিল। এর আগের বার ২৩ জুন পর্যন্ত লেগেছিল। গত ৩১ মে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের টেকনাফ উপকূলে আসে। এ উপকূল ধরেই এটি সারাদেশে বিস্তার লাভ করে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

একজন আবহাওয়াবিদ জানিয়েছেন, মৌসুমি বায়ুর দুটি শাখা রয়েছে। একটি হচ্ছে, আরব সাগরীয় শাখা। অন্যটি বঙ্গোপসাগরীয় শাখা। আরব সাগর শাখার মৌসুমি বায়ু মাদাগাস্কার থেকে গুজরাট ও কেরালা হয়ে ভারতে প্রবেশ করে। মৌসুমি বায়ুর আরেকটি শাখা আরব সাগর থেকে ভারতের ভেতর দিয়ে শ্রীলঙ্কা পার হয়ে বঙ্গোপসাগর দিয়ে টেকনাফ উপকূল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

মৌসুমি বায়ু জলীয়বাষ্প নিয়ে আসে, যা প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বাংলাদেশে বৃষ্টি হয়ে থাকে। মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা ও নিষ্ক্রিয়তার ওপর বৃষ্টিপাতের মাত্রা নির্ভর করে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হলে বেশি বৃষ্টি হয় নিষ্ক্রিয় হলে কম বৃষ্টি হয়।

অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সব বিভাগেই কম-বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এসময়ে সবচেয়ে বেশি ১৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে টেকনাফে। ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগে বৃষ্টির প্রবণতা কম ছিল। এসময়ে ঢাকায় ১২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।

শনিবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ এবং রংপুর বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি (৮৮ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে।

এসময়ে সারাদেশের দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চল সমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

বহাল ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত
আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। সমুদ্রবন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর-বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

Jag/N

// Disable right-click context menu // Disable text selection // Disable dragging of images and text // Disable copy events // Disable common keyboard shortcuts for copying // Check for Ctrl/Command key combinations with C, X, S, or P