মো. মিঠুন মিয়া
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে নাম বাঙালির হৃদয়ে লেখা। সবুজ শ্যামল তার সোনার বাংলার বুক থেকে সে নাম কখনো ছিড়ে কিংবা ক্ষয়ে যাবার নয়। তিনি বাঙালির মুক্তিদাতা ও বাংলাদেশের স্থপতি। পরাধীনতার গ্লানি মুছতে জীবন বাজি রেখে তিনি বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন। বিশ্বের দরবারে বাঙালিকে স্বাধীন জাতি হিসেবে পরিচয় করে দিয়ে বঙ্গবন্ধু রচনা করেছেন নতুন ইতিহাস। যে ইতিহাসের দিকে অবাক বিশ্ব তাকিয়ে রয়। ’৭৫ এর ঘাতকরা চেয়েছিল গণমানুষের এই নেতাকে চিরদিনের জন্য বাঙালির হৃদয় থেকে মুছে ফেলতে। নৃশংস খুনীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তার অবদানকে নাশ করতে পারেনি। বরং তাদের হিংস্র হানায় বঙ্গবন্ধু হয়েছেন আরো সজীব জীবন্ত ইতিহাস, বাঙালির অস্তিত্ব, অহংকারের প্রতীক তথা প্রেরণার এক জলন্ত উৎস। কথা, শব্দে কিংবা বাক্যে তার সেই অবদান বর্ণনাতীত। বাংলাদেশ যখন বঙ্গবন্ধুর রক্ত, আদর্শ এবং প্রেরণায় সমৃদ্ধির পথে ধাবমান তখন শোকাকান্ত হৃদয়ে তাকে বিনম্র শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি, জানাই হৃদয়ের ব্যাকুলতা। আমরা তরুণ, হয়তো মুজিবকে নিজ চোখে দেখার মতো সৌভাগ্য কপালে জোটেনি। কিন্তু আমরা জেনেছি তার দৃঢ়তা, আত্মত্যাগ, সাহস, আদর্শ, দেশপ্রেম, ব্যক্তিজীবন, মানবীয় গুনাবলী তথা সামগ্রিক জীবন যাপন। আজীবন সংগ্রামে যেমন তিনি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি; তেমনি স্বাধীন দেশের সমাজকে সব অপশক্তির কবল থেকে মুক্ত করার জন্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছিল তার বলিষ্ঠ ভূমিকা।
শেক্সপিয়ার বলেছিলেন, “এ জগতে কেউ কেউ জন্মগতভাবে মহান, কেউ মহত্বের লক্ষণ নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন, আবার কেউ স্বীয় প্রচেষ্টায় মহানুভবতা অর্জন করেন” এই ৩টি বৈশিষ্ট্যই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের ছিল। কিউবার প্রেসিডেন্ট বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রো বলেছিলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি।’ ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট (১৯৭২ সালের এক সাক্ষাৎকারে) বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘আপনার শক্তি কোথায়?’ বঙ্গবন্ধু সে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমি আমার জনগণকে ভালোবাসি।’ ‘আর আপনার দুর্বল দিকটা কী?’ বঙ্গবন্ধুর উত্তর ছিল, ‘আমি আমার জনগণকে খুব বেশি ভালোবাসি।’ এমন গুণের অধিকারীই ছিলেন বঙ্গবন্ধু। জনগণের অন্তর্নিহিত শক্তির ওপর অপার আস্থা-বিশ্বাস, মানুষের প্রতি নিঃশর্ত ভালোবাসা, মমত্ববোধ, সহমর্মিতার বিরল দৃষ্টান্ত সমৃদ্ধ মানুষ বঙ্গবন্ধু।
উত্তাল জনসভায় আঙ্গুল উচিয়ে দেয়া তার আদেশ আমাদের অনুপ্রাণিত করে। ইয়াহিয়া জান্তা সরকার তার ফাঁসির হুকুম কায়েম করতে চেয়েছিল। তা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি ঠিক করেছিলাম, আমি তাদের কাছে নতি স্বীকার করবো না। ফাঁসির মঞ্চে যাবার সময় আমি বলবো, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা। তোমরা মারলে ক্ষতি নাই।’ জীবন মৃত্যু সন্ধিক্ষণে তার এমন দৃঢ়তা আমাদের দেশপ্রেমী হতে শেখায়।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু তাঁর অবিনাশী মহাকাব্য সমাপ্ত করেছিলেন। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ এই মহাকাব্যের পর তিনি আর শুধুমাত্র রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন রইলেন না। তিনি হয়ে গেলেন গণমানুষের শেখ মুজিব, ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসা এক মহানায়ক। ৭ মার্চের ভাষণের মধ্যে দিয়েই বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠলেন মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশের জাতির পিতা।
বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন ছিল এ দেশের গণমানুষের সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এক গভীর মানবিক সংগ্রামী দর্শন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক অর্থনৈতিক দর্শন অনুযায়ী, গণমানুষের মুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শেষ পর্যন্ত মুক্তি সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জন্ম হলো ‘গণপ্রজাতন্ত্রী’ বাংলাদেশ, যেখানে সাংবিধানিকভাবেই ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ’ (সংবিধান, অনুচ্ছেদ ৭)। এ দর্শনের স্পষ্ট প্রতিফলন হলো তাঁর স্বপ্ন সোনার বাংলার স্বপ্ন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন, শোষণ-বঞ্চনা-দুর্দশামুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন।
আমাদের জীবনযাপনের প্রত্যেকটি মূহুর্তে মিশে আছেন বঙ্গবন্ধু। শিল্প সাহিত্য, কলা, সামাজিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সবাগ্রে আসেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির মুজিবের নাম। বঙ্গবন্ধু হয়েছেন গল্প উপন্যাসের নায়ক, কবিতার ছন্দ, গানের সুর, শিল্পীর তুলির আচর সর্বোপরি বাঙালির বেঁচে থাকার আশ্রয় স্থল।
১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৪৮ সালে ভাষার প্রশ্নে তাঁর নেতৃত্বেই প্রথম প্রতিবাদ এবং ছাত্র ধর্মঘট শুরু হয়। এরপরে ১৯৫৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা ভাষার প্রশ্নে বক্তব্য রাখার অধিকার দাবি করেন। ১৯৬৩ সালে ৫ ডিসেম্বরে লেবাননে হোসেন সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৬ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলগুলোর জাতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
১৯৬৬ সালের ৮ মে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আরও চৌত্রিশ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ৭ জুন তাঁদের আবার ছেড়ে দেওয়া হয়। তাকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ১৯৬৮ সালের ১৮ জানুয়ারী একজন আসামী হিসেবে আবার গ্রেফতার করে। ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার শুনানি সমাপ্ত হয়। ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণের কথা বললে তিনি তা প্রত্যাখান করেন। ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে শেখ মুজিবুর রহমানকে গণসংবর্ধনা দেয়া হয়।
১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক আইনসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। ১৯৭১ সালের ৩ জানুয়ারি রেসকোর্সের জনসভায় বঙ্গবন্ধু জনপ্রতিনিধিদের শপথ গ্রহণ পরিচালনা করেন। ৭ই মার্চ তৎকালীন ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)-এ বিশাল জনসভায় এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন শেখ মুজিব ১৬ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান যেখান থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেখানেই বাংলাদেশ-ভারত মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান হতে লন্ডন ও নয়া দিল্লী হয়ে ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন। ওই সালের ৪ নভেম্বর শেখ মুজিব বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা দেন। ১৫ ডিসেম্বরে যুদ্ধে শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করে। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে সদস্যপদের ঘোষণা দেয়। শেখ মুজিব জাতিসংঘের সভায় বাংলায় বক্তৃতা দেন। ১৯৭৪ সালে তিনি সকল রাজনৈতিক দলকে এক ছাতার নীচে আনতে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ বা ‘বাকশাল’। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা নির্মমভাবে হত্যা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর পরিবারের ১৭ জন সদস্যদের।
বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশের হাল ধরেছিলেন বলেই পৃথিবীর শতাধিক দেশ বছরখানেকের মধ্যেই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। চীনের উপর্যুপরি বিরোধিতা সত্ত্বেও জাতিসংঘের স্বীকৃতি ও সদস্যপদ লাভ করেছিল বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু নেতৃত্ব গ্রহণ করে ভারতের সহযোগিতা নিয়ে যুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশের অর্থনীতি, সামাজিক ও প্রশাসনিক অবকাঠামো, ধ্বংস হয়ে যাওয়া যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনর্গঠন ও পুনর্র্নিমাণের কাজ শুরু করেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন করতেও তিনি সক্ষম হন। ব্যাপক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও পৃথিবীর অনেক দেশেই বাংলাদেশ দূতাবাস স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলেই মুক্তিযুদ্ধোত্তর ধ্বংসপ্রাপ্ত বাংলাদেশেকে তিনি একটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন।
বাঙালির মুক্তির বারতা দিয়ে জন্ম হয়েছিল মহান এ নেতার। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান ও শেখ সায়েরা খাতুনের কোলজুড়ে বাঙালির বহু শতাব্দীর পরাধীনতার শেকল ভাঙতে শান্তি ও মুক্তির বার্তা নিয়ে জন্ম নেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর বাল্যকাল টুঙ্গীপাড়া গ্রামেই কাটে। মধুমতি আর বাঘিয়ার নদীর তীরে এবং হাওড়-বাঁওড়ের মিলনে গড়ে ওঠা বাংলার অবারিত প্রাকৃতিক পরিবেশে টুঙ্গীপাড়া গ্রামটি অবস্থিত। গ্রামেই শেখ মুজিবুর রহমান ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা শস্য-শ্যামলা রূপসী বাংলাকে দেখেছেন। তিনি আবহমান বাংলার আলো-বাতাসে লালিত ও বর্ধিত হয়েছেন। শাশ্বত গ্রামীণ সমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না ছেলেবেলা থেকে গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন। গ্রামের মাটি আর মানুষ তাঁকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করতো।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে স্বাধীন বাংলাদেশে নেমে আসে বাঙালি জাতির ওপর এক কালো থাবা। জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা এবং স্বাধীনতার চেতনাকে মুছে ফেলার এক কালো অধ্যায়ের সূচনা করে। তারপর ২১ বছর দেশের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকে সাম্প্রদায়িক ও স্বাধীনতা চেতনাবিরোধী শক্তি। সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপদগামী সদস্য সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নোবেল জয়ী পশ্চিম জার্মানির নেতা উইলি ব্রানডিট বলেন, মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যে কোন জঘন্য কাজ করতে পারে। ভারত বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক নীরদ সি চৌধুরী বাঙালিদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি বিশ্বের মানুষের কাছে নিজেদের আত্মঘাতী চরিত্রই তুলে ধরেছে। দ্য টাইমস অব লন্ডন’র ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়, সবকিছু সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সব সময় স্মরণ করা হবে। কারণ তাকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোন অস্তিত্ব নেই। একই দিন লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় বলা হয়, বাংলাদেশের লাখ লাখ লোক শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকা-কে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করবে।
বর্তমানে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলছেন। পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে তিনি দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তার নেতৃত্বের ধারাবাহিকতায় উন্নয়নের মহাসড়কে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। কার্যকর নেতৃত্ব ও সমন্বিত উদ্যোগের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস (এমডিজি) অর্জনে অনন্য সাফল্য দেখিয়েছে। জাতিসংঘ প্রণীত সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস (এসডিজি) বাস্তবায়নে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে নেতৃত্বের আসনে এখন বাংলাদেশ।
আমাদের ভাগ্যে মিলেছে বঙ্গবন্ধুর মতো মহান নেতার আদর্শে গড়ে তোলা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বিশ্বে দরবারের পরিচিত হওয়ার। বাঙালি, বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু একই সূত্রে গাঁথা। তিনি জীবিত আছেন আমাদের চিন্তা চেতনা ধ্যান ধারণা। আমাদের সমস্ত আয়োজন তাকে ঘিরেই। বাংলা আকাশে বাতাশে তিনি মিশে আছেন। বঙ্গবন্ধু সর্দা জাগ্রত আমাদের বিজয় মাখা মুক্তিযুদ্ধে। তার জীবনী আমাদের সুপথে পরিচালিত করে। দেখায় কল্যাণ, সমৃদ্ধ এবং অগ্রগতির পথ। তিনি ছিলেন মানবীয় গুণে গুনান্বিত একজন ব্যক্তি। তার জীবনের যাবতীয় আয়োজন এবং কর্মকান্ড ছিল মানব কল্যাণের নেপথ্যে। পারিবারিক, সামাজি, জাতীয় এবং রাষ্ট্রীয় জীবনের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই হয়ে উঠুক আমাদের পথের পাথেয়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে তুলতে হবে। তাদেরকে জানাতে হবে বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন। ‘যতকাল রবে পদ্মা, মেঘনা গৌরী, যমুনা বহমান ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।
লেখকঃ- প্রভাষক , গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ।