জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দেশের ৫০-এরও বেশি জেলায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যায় ব্যবহৃত হয়েছে মারণাস্ত্র (লেথাল উইপন)। সাবেক এনটিএমসি’র মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান শেখ হাসিনার দেওয়া একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের অবস্থান শনাক্ত করতেন। এই আক্রমণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বেশি ঘটেছে ৪১ জেলার ৪৩৮ স্থানে।
মঙ্গলবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে দেওয়া জবানবন্দিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর এসব তথ্য উল্লেখ করেন।
এ সময় ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শিত আলজাজিরার একটি প্রতিবেদনে তুলে ধরে বলা হয়, সাবেক এনটিএমসি’র মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান শেখ হাসিনার দেওয়া একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের অবস্থান শনাক্ত করতেন। পরে র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের তুলে নিয়ে নির্যাতন করতেন। শেখ হাসিনার শাসনামলে গুম হওয়া বেশিরভাগ ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। আলামত গায়েবের অংশ হিসাবে হত্যার পর অনেকের লাশ সিমেন্টের ব্যাগ বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হতো।
অপরদিকে বিবিসির প্রতিবেদনের বরাতে বলা হয়, একটি নথির তথ্য মতে যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ ২৪৪৪ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে। এরমধ্যে ৬৯৫টি এসএমজির গুলি।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে সাক্ষ্য পেশ করেন তিনি।
তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরার জন্য আগামী সোমবার দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন-বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এদিন বিচার কার্যক্রম বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় তৃতীয় দিনের মতো ৫৪তম সাক্ষী হিসাবে আলমগীরের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। জবানবন্দির একপর্যায়ে তিনি বলেন, গত বছরের জুলাই আন্দোলন চলাকালীন ৪১টি জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যাকাণ্ড হয়েছে। ৫০টিরও বেশি জেলায় মারণাস্ত্র ব্যবহার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এই আন্দোলনকারীদের সবাই সাধারণ নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা। সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা এনটিএমসি’র মতো প্রতিষ্ঠান মোবাইল ট্র্যাকিং করে আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করে।
jugN