বিডি নীয়ালা নিউজ(৬জানুয়ারি১৬)- অনলাইন প্রতিবেদনঃ রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুু বলেছেন, জনবিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণেই রংপুরের পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ভরাডুবি হয়েছে। সঠিক পথে এসে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে না পারলে আগামী দিনে দল দুটি নিঃশেষ হয়ে যাবে। মেয়র ঝন্টু আরও বলেন, পৌর নির্বাচনে গিয়ে বিএনপি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু জনগণকে সংগঠিত করতে পারেনি। তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপির প্রতি ঘৃণা থেকে মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। মানুষ উন্নয়ন দেখেছে। সরকারি দলের প্রার্থীকে ভোট না দিলে এলাকায় উন্নয়ন হবে না— ভেবেই মানুষ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে। তিনি বলেন, রাজনীতিতে একটা ভুল করলে জীবদ্দশায়ও সেটা শোধরানো অনেক কঠিন। যার উদাহরণ সম্প্রতি শেষ হওয়া পৌর নির্বাচন। তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের অতীত আন্দোলনকে ইঙ্গিত করে বলেন, বিএনপি-জামায়াতের ফাঁদে পড়ে আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারলো। জ্বালাও-পোড়াও করল। টানা চার মাস হরতাল-অবরোধ দেওয়া হলো। এ আন্দোলনে জনগণকে মাঠে নামানো তো দূরের কথা দলের নেতা-কর্মীরাও মাঠে ছিল না। বিএনপি মনে করেছিল তারা এভাবে সরকারের পতন ঘটাবে। সরকারও গুড্ডির সুতায় ঢিল দিয়ে জনগণের কাছে প্রমাণ করলো স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারছে, গাড়ি পোড়াচ্ছে, রাস্তার গাছ কেটে সাবাড় করছে, রেললাইন উপড়ে ফেলছে। এমনকি তারা পুলিশকেও হত্যা করছে। এটা দেখার পর জনগণ মনে করল বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান এবং মনে মনে ঘৃণা করল। তারই বহির্প্রকাশ ঘটেছে পৌর নির্বাচনে। বিএনপির ভরাডুবি ঘটেছে। মানুষের ঘৃণার ফসল বিএনপিকে ঘরে তুলে নিতে হয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলন সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। তখন তিনি রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। পৌরসভা নির্বাচনে জাতীয় পার্টির বিপর্যয়ের কারণ সম্পর্কে ঝন্টু বলেন, রংপুরের মানুষ ২৫ বছর অপেক্ষা করেছিল এরশাদ তাদের জন্য কিছু করবে বলে। তিনি কিছুই না করে নানা স্বপ্ন দেখিয়ে নানা চরিত্রে আবির্ভূত হয়ে শুধু নিজের আখের গুছিয়ে নিয়েছেন। একেক সময় একেক কথা বলে নিজেও বিতর্কিত হয়েছেন, রংপুরের মানুষকেও বিব্রত করেছেন। সে কারণে রংপুরসহ সারা দেশের জনগণ তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফলে তার জীবনে এবং জাতীয় পার্টির নামে স্টাবলিস্ট করার কোনো জায়গা বা রাস্তা আছে বলে আমি মনে করি না। ঝন্টুু আরও বলেন, এ দলটি ধ্বংস হওয়ার পেছনে কারও কোনো দোষ নেই। এরশাদের দল এরশাদই তাকে গলা টিপে হত্যা করেছেন। এরশাদের জন্য এটা পাওনাই ছিল। সে পাওনা তিনি পেয়ে গেছেন। তার অহংকার ছিল মানুষ তাকে ভোট দেবেই। তিনি প্রতি মুহূর্তে মত পাল্টাবেন, আর মানুষ তার পাশে থাকবে— এটা হতে পারে না। সুতরাং তার অহংকারের পতন হয়েছে। দুর্গেই তার দুর্গতি হয়েছে। আগামীতে আরও ভয়াবহ দুর্গতি অপেক্ষা করছে তার জন্য। পৌরসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে মেয়র ঝন্টু বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেই থাকে। বিএনপি আমলে ঘটেছে, এখন আওয়ামী লীগ আমলে ঘটছে। আমাদের পাশের গণতান্ত্রিক দেশ ভারতেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময় এর চেয়ে বড় ধরনের ঘটনা ঘটে। তবে সব মিলিয়ে পৌরসভা নির্বাচন ভালো হয়েছে। মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়েছেন। আমি মনে করি, এরচেয়ে ভালো ভোট আশা করা যায় না।