Sunday, 09 March 2025, 08:34 PM

করোনা মহামারীতে কেমন আছেন গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি কর্মীরা

                                                    ………মোঃ আব্দুল মান্নান

বিশ্বে এখন চলছে করোনা মহামারীর প্রচণ্ড দাপট। শক্তিশালী ও ধনী দেশগুলো এ মহামারী প্রতিরোধে এখনও নাজেহাল। বিশ্বে বহু মানুষের প্রাণ গেছে এ করোনার আক্রমনে। বাংলাদেশেও এ পর্যন্ত আট হাজারের অধিক মানুষের প্রাণ গেছে। আক্রান্তের সংখ্যাও অনেক। এ মহামারী রোগ প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ টীকা আবিষ্কার করেছে এবং ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে টীকা প্রদানও চলছে, যদিও এতে অনেকের স্বাস্থ্য ঝুকির খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তবুও থেমে নেই মানুষ, আগ্রহ বাড়ছে দিন দিন টীকা গ্রহণের। আমাদের দেশেও টীকা প্রদান শুরু হয়েছে প্রাথমিক ভাবে। আগামীতে হয়তঃ ব্যাপকভাবে করোনা টীকা প্রদান শুরু হবে। এতসব প্রতিকূলতার মাঝেও কিন্তু থেমে নেই মানুষের জীবন জীবিকার প্রয়োজন মিটাতে কর্মব্যস্ততার।

করোনার কারণে বিশ্বে যোগাযোগ ব্যবস্থা, কল-কারখানা, শিল্প-বানিজ্য, শিক্ষা-সংস্কৃতি সবকিছুতেই স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বিশ্বের সব দেশের মত আমাদের দেশেও অনুরুপ অবস্থা বিরাজ করছে। সরকার এ সমস্যা থেকে উত্তরণে ক্ষতিগ্রস্থ খাত সমুহের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ খাত সমুহে প্রণোদনা চালু করে অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে অনেকটা সফল হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে যেখানে চলছে মন্দা, সেখানে আমাদের দেশের অর্থনীতি অনেকটা ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে আইএমএফ এর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রবৃদ্ধি অর্জনেও অনেকটা এগিয়ে বাংলাদেশ। বর্তমান সরকার প্রধান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ জন্য দেশে বিদেশে প্রশংসিত হয়েছেন।

এত সাফল্যের মাঝেও কিন্তু একটি বিষয়ে সদাশয় সরকারের  দৃষ্টি হয়ত এড়িয়ে গেছে বলে মনে করছি। আমাদের দেশ কৃষিপ্রধান দেশ। দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনে কৃষকের অবদান ভোলার মত নয়। সেই সাথে ধন্যবাদ জানাতে হয় এ বিভাগে কর্মরত সংশ্লিষ্ঠ সকলকে। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল আজকের এ সাফল্য। যাদের অবদানে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকের হাসিই দেশের মানুষের সুখের ইঙ্গিত বহন করে। সেই কৃষকের বিনোদনের জন্য গ্রাম্য বাংলার লোকজ সংস্কৃতি শিল্প সংস্কৃতিমনা মানুষ যারা খেটে খাওয়া এসব মানুষগুলোকে আনন্দ-বিনোদন দিয়ে তাদের কষ্টকে ভুলিয়ে রাখত। করোনা মহামারী আসার আগে এসব শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী গ্রাম বাংলার খেটে খাওয়া এসব সোনার মানুষের মুখে হাসি ফোটাতো, বিনোদনের মাধ্যমে ভরিয়ে রাখত এদের মন। এ ভাবেই চলত এসব শিল্পীর জীবন জীবিকা। তারা গ্রাম বাংলার চিরায়ত-ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, পল্লীগীতি-যাত্রা-নাটকের মাধ্যমে আনন্দ দিয়ে জীবিকা অর্জন করে চালাত তাদের সংসার। শুধু শিল্পীরাই নয়, এদের সাথে থাকত আরো বিভিন্ন বাদকদল। যাদের মধ্যে অনেকেই এ করোনা মহামারীর কারণে বেকার হয়ে আর্থিক অভাবের মাঝে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

করোনার কারণে জনসমাবেশ বন্ধসহ স্বাস্থ্য বিধি মানতে স্কুল, কলেজসহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিনোদনমূলক কোন অনুষ্ঠানই এখন আর হয় না। মানুষের মাঝে এখনও করোনা  আতঙ্ক বিরাজ করায় সকলেই এ সমস্ত বিনোদন থেকে অনেকটা মুখ ফিরিয়ে রেখেছে। ফলে সাংস্কৃতিক জগতের এসব শিল্পীর জীবন জীবিকার পথ  একরকম বন্ধই হয়ে গেছে। যার কারণে তারা আর্থিক দৈন্যতাসহ মানবেতর জীবন যাপন করছে। এ মহাদূর্যোগে তাদের এমন দুরাবস্থায় সরকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন এটাই সংস্কৃতিকর্মীদের প্রত্যাশা।                                                                   

লেখক ও সাংবাদিক

// Disable right-click context menu // Disable text selection // Disable dragging of images and text // Disable copy events // Disable common keyboard shortcuts for copying // Check for Ctrl/Command key combinations with C, X, S, or P