আন্তর্জাতিক রিপোর্ট : ব্রিটেনের ডার্বিশায়ারের যে বাড়িতে, যে ঘরে তাদের কয়েক দশকের বিবাহিত জীবন কেটেছে, স্ত্রী ওয়েন্ডির মৃত্যুর পর রাসেল ডেভিসন মৃতদেহ সে ঘরেই ছয়দিন রেখে দেন। ছয় রাত সেই ঘরেই ঘুমিয়েছেন তিনি।দশ বছর ক্যান্সারে ভুগে ৫০ বছর বয়সে গতমাসে মারা যান ওয়েন্ডি ডেভিসন।নিজেদের শোয়ার ঘরের খাটে স্বামী রাসেল ডেভিসনের বাহুতে মাথা রেখে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ফেলেন।ব্রিটেনের বর্তমান প্রথা অনুযায়ী শেষকৃত্যের আগে মৃতদেহ এলাকার সুনির্দিষ্ট হিমঘরে রাখতে হয়। কবর দেওয়া বা দাহ করার আগে একজন নার্স মৃত ব্যক্তিকে গোসল করান।
কিন্তু স্ত্রীকে এতটাই ভালবাসতেন মি ডেভিসন যে তিনি সেই প্রথা ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত নেন। নিজ হাতে স্ত্রীকে গোসল করিয়ে, পোশাক পরিয়ে নিজেদের বেডরুমেই ছয়দিন ধরে রেখে দেন। মৃত স্ত্রীর সাথে একই ঘরে ঘুমিয়েছেন ঐ ছয় রাত।মি ডেভিসন বলেন, “শেষকৃত্যের আগে আমি তাকে বাড়ির বাইরে বের করে কোনো হিমঘরে রাখতে চাইনি। আমিই তাকে দেখে রাখতে চেয়েছিলাম। বেডরুমে রেখেছিলাম যাতে আামি তার সাথে ঘুমোতে পারি।”
ব্রিটেনের ডার্বিশায়ার কাউন্টি কোর্ট নিশ্চিত করেছে এতদিন মৃতদেহ ঘরে রেখে প্রথা ভঙ্গ হলেও আইন ভঙ্গ হয়নি। চিকিৎসককে জানিয়ে শেষকৃত্যের আগ পর্যন্ত ঘরে রাখলে আইন ভঙ্গ হয়না।২০০৬ সালে ওয়েন্ডি ডেভিসনের জরায়ুর ক্যান্সার ধরা পড়ে। ২০১৪ সালে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন তিনি আর মাস ছয়েক হয়তো বাঁচবেন।জীবনের শেষ দিনগুলো উপভোগ করার জন্য স্বামী-স্ত্রী পুরো ইউরোপ ঘোরার জন্য বেরিয়ে পড়েন। কিন্তু গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে মিসেস ডেভিসনের শরীরের অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়লে তারা তাদের ডার্বিশায়ারের বাড়িতে ফিরে আসেন। সেখানেই ২১শে এপ্রিল ওয়েন্ডি ডেভিসন মারা যান।”ওয়েন্ডি শান্তিতে মারা গেছে। মৃত্যুর সময় পুরোপুরি অচেতন ছিলো। আমি এবং আমার ছেলে ডিলানের বাহুতে মাথা রেখে সে চলে যায়।”
বি/বি/সি/এন