ডেস্ক রিপোর্টঃ রক্তের গ্রুপ, শরীরের গঠন, গন্ধ— এরকম বেশ কয়েকটি কারণে মশারা অনেক মানুষের মাঝে একজনের প্রতি বেশি ‘ভালোবাসা’ প্রকাশ করতে পারে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় বসে মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে অনবরত নিজেকে থাপড়াচ্ছেন! বন্ধুরা হয়ত মশকরা করে বলে- “তোর রক্তে স্বাদ বেশি” কিংবা “মশা তোকে একটু বেশিই ভালোবাসে”। কথাটা নিছক ঠাট্টা মনে হলেও, বিজ্ঞান বলছে আপনার প্রতি মশার বাড়তি ভালোবাসা আসলেও সত্যি হতে পারে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনে ‘আমেরিকান মসকিটো কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশন’য়ের কারিগরি উপদেষ্টা ড. জো কোনলোন বলেন, “শরীরের বিশেষ কোনো উপদান কিংবা ঘ্রাণের কারণে মশারা বেশি আকৃষ্ট হতে পারে। এসব নিয়ে চলছে একাধিক গবেষণা। আকৃষ্ট করা উপাদানের সংখ্যা ৪শ’ পর্যন্ত হতে পারে বলে আমাদের ধারণা। যদিও গবেষণা মাত্র শুরু হয়েছে, তবে কিছু কারণ আমার চিহ্নিত করতে পেরেছি।”
এই কারণগুলো মশাকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে। আর মনে রাখবেন মানুষের শরীরের এসব উপাদান দেড়শো ফুটের বেশি বা ৫০ মিটার দূর থেকেও মশারা টের পায়।
রক্তের গ্রুপ: যাদের রক্তের গ্রুপ ‘ও পজেটিভ’ কিংবা ‘ও নেগেটিভ’ তারা মশাদের বেশি প্রিয়। আবার যাদের রক্তের গ্রুপে ‘এ’ আছে তাদের প্রতি মশার আকর্ষণ ‘ও’ গ্রুপের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ কম। ‘বি পজেটিভ’ এবং ‘বি নেগেটিভ’ গ্রুপের রক্তের প্রতি মশার আকর্ষণ ‘ও পজেটিভ’ কিংবা ‘ও নেগেটিভ’য়ের তুলনায় কম। তবে ‘এ পজেটিভ’ কিংবা ‘এ নেগেটিভ’য়ের তুলনায় বেশি।
কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ: সবধরনের কার্বন-ডাই-অক্সাইডের প্রতি মশারা আকৃষ্ট হয়। শরীর যত বড়, কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণও তত বেশি। একারণে শিশুদের তুলনায় প্রাপ্তবয়স্কদের মশা বেশি কামড়ায়। আবার একই কারণে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় গর্ভবতী মায়েদের প্রতি মশার আকর্ষণ বেশি।
খেলোয়াড়দের প্রতি আকর্ষণ: উষ্ণতা, শারীরিক নড়াচড়া, ঘামের গন্ধ পছন্দ করে এই কীট। ঘামের মধ্যে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড, ইউরিক অ্যাসিড, অ্যামোনিয়া ইত্যাদির ঘ্রাণ নিতে পারে মশা। তাই যারা খেলাধুলা ও শরীরচর্চা করেন তাদের উপর মশার আক্রমণ সাধারণত বেশি হয়।
ত্বকের ধরন: ত্বকে স্টেরইড কিংবা কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি হলে- মশা বেশি আকৃষ্ট হয়। তবে ত্বকের কোলেস্টেরল বেশি মানে শরীরেও বেশি এমনটা নয়। শরীর যখন বেশি কোলেস্টেরল প্রক্রিয়াজাত করতে বেশি দক্ষ হয়ে ওঠে, তখন উপজাত হিসেবে ত্বকে কোলেস্টেরল ছড়ায়। ফলে মশা আকৃষ্ট হয় বেশি।
বি/ডি/এন