Saturday, 10 May 2025, 06:41 AM

নীলফামারী সদর হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সংকট ।। কুকুরের...

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারীতে কুকুর-বিড়ালের উপদ্রবে মানুষ অতিষ্ঠ। শহরের অলিগলিতে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ায় কুকুর। কিন্তু কুকুর-বিড়ালের কামড় ও আঁচড় খেয়ে নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে অনেকেই প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) পাচ্ছেন না। হাসপাতালে প্রতিষেধকের সংকটে অনেকে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

কুকুর-বিড়ালের উপদ্রবের কথা স্বীকার করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে কুকুর নিধন করা যাচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ১৫ দিনের জন্য হাসপাতালে ৫০ ভাইল করে প্রতিষেধক সরবরাহ করা হয়, যা দিয়ে প্রয়োজন মেটে না।

গত শনিবার বিকেলে শহরের বাবুপাড়া মহল্লায় দেখা যায়, ১৫ থেকে ২০টি কুকুর দল বেঁধে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ওই পথ দিয়ে চলাচলকারীরা সাবধানে যাচ্ছেন। এ সময় ওই মহল্লার স্কুলশিক্ষক লীনা দে বলেন, কুকুরের উৎপাতে রাস্তা দিয়ে চলাচল দুষ্কর হয়ে পড়েছে। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠালে কুকুরের ভয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। প্রতিদিন শোনা যায় কাউকে না কাউকে কুকুর কামড় দিয়েছে।

সদরের টুপামারী গ্রামের সাদ্দাম হোসেন (২০) বলেন, ‘দুই বছর আগে শুনেছিলাম কুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এখন কোনটার ভ্যাকসিন দেওয়া আছে, আর কোনটার ভ্যাকসিন দেওয়া নেই, সেটা আমরা বুঝব কীভাবে। তাই কুকুরে কামড় দিলেই ভ্যাকসিন দিতে হচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালে গেলে শুনতে হয় ভ্যাকসিন নেই।’

গতকাল রোববার সকালে নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষেধকের জন্য রোগীর দীর্ঘ সারি। এ সময় সদর উপজেলার চড়াইখোলা ইউনিয়নের বটতলী গ্রামের রওশনারা বেগম (৪০) বলেন, ‘বিড়াল আঁচড় দিয়েছে। ভ্যাকসিনের জন্য আসছি, কিন্তু হাসপাতালে নাকি প্রতিষেধক নেই।’

জলঢাকার পূর্ব বালাগ্রাম থেকে ছয় বছরের শিশুসন্তান সঞ্জয়কে প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা ধীরেন্দ্র নাথ রায় (৪৫) বলেন, ‘ছেলেকে কুকুর কামড় দিয়েছে। জলঢাকায় ভ্যাকসিন পাওয়া যায় না। কিন্তু এখানে এসেও পেলাম না। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে কিনে দিতে হবে।’

ওই হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. হাসিনুর রহমান নীলফামারীনিউজ-কে বলেন, ‘প্রায় সাত দিন আগে হাসপাতালের প্রতিষেধক শেষ হয়েছে। প্রতি ১৫ দিনের জন্য ৫০টি করে প্রতিষেধক পাই। ৫০টা দিয়ে ২০০ জনের একটি করে ডোজ হয়। প্রতিজনকে ২৮ দিনের ব্যবধানে চারটি করে ডোজ দিতে হয়। প্রতিদিন কুকুর-বিড়ালে কামড়ানো রোগী আসেন ৭০ থেকে ৮০ জন। ওই ৫০টা ভ্যাকসিন দুদিন চলে। এ কারণে রোগীদের বাইরে থেকে প্রতিষেধক কিনে আনতে বলি। এখানে সেটি পুষ করে দেওয়া হয়।’

পৌরসভার প্যানেল মেয়র ইসা আলী নীলফামারীনিউজ-কে বলেন, ‘কুকুরের উপদ্রবে রাস্তায় চলাচল করা যায় না। কুকুর মারাও যাচ্ছে না। আমার এলাকায় কয়েক দিনে কয়েকটি ছাগলকে কুকুর মেরে ফেলেছে।’ পৌরসভার সচিব মো. মশিউর রহমান নীলফামারীনিউজ-কে বলেন, ‘কুকুর নিধনে আমাদের জনবল নেই। আগে ঢাকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও জনস্বাস্থ্য মহাখালী থেকে কুকুর নিধনের জন্য লোক আনা হতো। এখন সেখানেও ওই জনবল নেই। এ কারণে ২০১৪ সাল থেকে কুকুর নিধন বন্ধ আছে।’

কুকুর-বিড়ালের উপদ্রবের কথা স্বীকার করে পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহম্মেদ নীলফামারীনিউজ-কে বলেন, ‘কোনো জীব হত্যা করা যাবে না, উচ্চ আদালতের এমন একটি রুল আছে, এ কারণে আমরা নিরুপায়।’

// Disable right-click context menu // Disable text selection // Disable dragging of images and text // Disable copy events // Disable common keyboard shortcuts for copying // Check for Ctrl/Command key combinations with C, X, S, or P