জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন বিএনপি ও শহীদ জিয়ার পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থেমে নেই, বিএনপির জনপ্রিয়তায় ভয় পেয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা এখন আবোল তাবোল বকছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবউদ্দিন মাত্র ৩ মাসের মধ্যে সে সময় দেশে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে পারলেও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনও নির্বাচন দিতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে নির্বাচন আয়োজনে যতই বিলম্ব হবে, ততই অরাজকতা সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি দ্রুততম সময়ে সংস্কার ও স্বৈরাচারের বিচার চায়। যারা শুধু জুলাই অভ্যুত্থানে নয়, সাড়ে ১৫ বছরে গুম, খুন,ও জুলুম নির্যাতন করেছে তাদের সকলের বিচার করতে হবে। গুম ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিসহ শহীদদের আত্মা তখনই শান্তি পাবে, যখন স্বৈরাচারের বিচার হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ীতে মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরীর কবরে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন ও দোয়া শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি ওইসব কথা বলেন।
ডা. এ জেড এম জাহিদ বলেন,
মাহেরীন নিজের জীবনের কথা না ভেবে ২০ জন শিক্ষার্থীর জীবন রক্ষা করেছেন। যা আমাদের দেশে অনন্য দৃষ্টান্ত, তিনি আমাদের সমাজে আলোকিত মানুষ। তাঁর এ ত্যাগের কথা আমরা সারাজীবন মনে রাখবো। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে নীলফামারী জেলার বিএনপি নেতৃবৃন্দ শিক্ষার কারিগর এই মহীয়সী শিক্ষিকার প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে এসেছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির নীতি নির্ধারনী কমিটির (স্থায়ী কমিটি) অন্যতম সদস্য
ডা. জাহিদ বলেন,প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে বাংলাদেশের সকল জনগনের সেই কাঙ্খিত নির্বাচন হবে। তাঁর কথায় আমরা এখনও আশাবাদী যে গণতন্ত্র ফিরে আসবে।
গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন,১/১১ থেকে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিষয়ে অনেক প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ। পালিয়ে যাওয়া সেই স্বৈরাচারী দল কোন অভিযোগই প্রমাণ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগের একটাই কাজ ছিল,তা হলো বিএনপি ও জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র করা। তিনি বলেন,দেশের জনপ্রিয় আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৩ বারের সফল প্রধানমন্ত্রী। তিনি ২৩টি সিটে নির্বাচিত। জনগণ কখনই বিমুখ করেনি। এই জনপ্রিয় মানুষের উত্তরসূরি তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাঁকেও আওয়ামী ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পড়তে হয়েছে, তাঁর চরিত্র হননেরও অনেক চেষ্টা হয়েছে। এমনকি তাকে পঙ্গু করে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু জনগনের দোয়া ও ভালোবাসায় আল্লাহর রহমতে কিছুই করতে পারেনি। এই ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। যেমন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বানোয়াট মামলা দিয়ে তাকে ৬ বৎসরের বেশী সময়ে কারাবন্দি করা হয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়া ২০১৮ ফেব্রুয়ারি মাসে আলিয়া মাদ্রাসার বিশেষ আদালতে হেঁটে গেলেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যখন, পিজি হাসপাতাল থেকে শর্তে গৃহবন্দী করা হলো তখন খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে ভর করতে হলো। তারেক রহমানের মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মামলার জট শেষ হলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শেষে ফিরবেন।
শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরীর কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং বিশেষ মোনাজাতের সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস ইসলাস স্বপ্না, নীলফামারী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মীর সেলিম ফারুক, সদস্য সচিব সাইফুল্লাহ রুবেল, যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তফা প্রধান বাচ্চু, সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রামাণিক, বিএনপি নেতা ও জলঢাকা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ আলীসহ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।