Wednesday, 23 July 2025, 04:49 AM

পাকিস্তানে ভারতের হামলা, যা বলা হলো ইমরান খানের...

পাকিস্তানের ছয়টি শহরে মঙ্গলবার মধ্য রাতে হামলা করেছে ভারত। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। এরপর থেকেই বিশ্বজুড়ে আলোচনায় চলে এসেছে দুই দেশের এই সংঘাত। 


ঠিক এই সময়ে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ফেসবুকে ভেসে উঠল একটি বার্তা। তার পুরোনো একটি বক্তব্যের ভিডিও প্রকাশ করে সেখানে দাবি করা হয়েছে তার মুক্তি। বলা হয়েছে তার মুক্তির সঙ্গে জড়িয়ে আছে পাকিস্তানের বৃহত্তর স্বার্থও।


ইমরান খানের অফিসিয়াল ফেসবুক পাতায় পোস্ট করা ভিডিওটি ২০১৯ সালের। জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে ইমরান সেদিন ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জোর গলায় বলেছিলেন, ‘যদি দুই দেশের মধ্যে সাধারণ যুদ্ধ শুরু হয়, তবে যে দেশটি তার প্রতিবেশীর তুলনায় সাত গুণ ছোট, সে কী করবে? আত্মসমর্পণ নাকি স্বাধীনতার জন্য মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লড়াই? আমি বিশ্বাস করি—‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’—এবং আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করব। আর যখন একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ শেষ পর্যন্ত লড়ে, তখন এর পরিণতি সীমানা পেরিয়ে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।’


ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যকার রাজনৈতিক টানাপোড়েন সামরিক রূপ নেয় মাঝেমধ্যেই। ২০১৯ সালেও ঘটেছিল এমন কিছু। সে বছর ফেব্রুয়ারিতে পুলাওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় প্রাণ হারান বেশ কিছু ভারতীয় সেনা সদস্য। এরপর থেকে দুই দেশ চলে এসেছিল মুখোমুখি অবস্থানে। এরপর সে বছর জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে এ কথাগুলো বলেছিলেন ইমরান। 



বছর ছয়েক পর আবারও যখন একই পরিস্থিতি দুই দেশের মাঝে, ঠিক তখন আবারও সে বক্তব্য প্রকাশ করা হলো ইমরানের ফেসবুকে। বিষয়টা হলো এমন এক সময়ে, যখন ইমরান আছেন কারাগারে। সে পোস্টে ইমরানের কারামুক্তির বিষয়টিও চাওয়া হয় জোর দিয়ে।


সেখানে বলা হয়, ‘‘আমি বিশ্বাস করি—‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’—এবং আমরা লড়াই করব’– ভারতের আধিপত্যবাদী হুমকির মুখে এমনটাই ঘোষণা দিয়েছিলেন ভয়ডরহীন নেতা, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বহিরাগত হুমকির মুখে একটা স্বাধীন-সার্বভৌম জাতিকে এভাবে শক্তি আর একতার মাধ্যমে জবাব দেওয়া উচিত। আর ঐক্যটা আসে সত্যিকারের নেতার হাত ধরেই। এখনই সময় ইমরান খানকে মুক্তি দেওয়ার, তার পরামর্শ নেওয়ার। এই ইমরান খানই পাকিস্তানের জনতার কণ্ঠস্বর, সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের নেতা, বহিঃশত্রুর আগ্রাসনের জবাবে পুরো জাতিকে এক সুতোয় গাঁথতে এই একজনই পারেন।’


ভারত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার পর হামলা চালায় পাকিস্তানের ছয়টি শহরে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে এই অভিযান চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের নয়টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। পাকিস্তানের ছয় শহর-পাঞ্জাবের শিয়ালকোট, ভাওয়ালপুর ও মুরিদকে এবং পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফ্ফরাবাদ, বাগ ও কোটলি শহরে একের পর এক ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে।


ভারতের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোনো স্থাপনায় হামলা চালায়নি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআই জানিয়েছে, ভাওয়ালপুরে পাকিস্তানভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান কার্যালয় এবং মুরিদকে শহরে পাকিস্তানভিত্তিক আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী লস্কর-ই-তায়েবার প্রধান কার্যালয়সহ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর আস্তানায় এসব হামলা চালিয়েছে।


এসব হামলায় অন্তত আটজন নিহত এবং ৩৫ জন আহত হয়েছে। এর পাল্টা জবাবে রাতেই পাল্টা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা হামলায় অংশ নেওয়া ভারতের পাঁচটি জঙ্গি বিমান ভূপাতিত করেছে।


এদিকে পাল্টা জবাবে রাতেই হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। সকাল থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় গোলাগুলি চলছে দুদেশের। এতে ২ শিশু, ১ মহিলাসহ অন্তত সাত জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। এ হামলায় আহতও হয়েছেন ৩৮ জন। ভারতের কয়েকটি পত্রিকা অবশ্য মৃত্যুর সংখ্যা ১০ জন বলে দাবি করছে।

jug/n

// Disable right-click context menu // Disable text selection // Disable dragging of images and text // Disable copy events // Disable common keyboard shortcuts for copying // Check for Ctrl/Command key combinations with C, X, S, or P