Saturday, 26 July 2025, 12:32 PM

রাতে ২৫ মিনিটের মধ্যে পাকিস্তানের ৯ স্থানে হামলা...

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে বলেছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’–এর মাধ্যমে ভারত প্রত্যাঘাতের অধিকার প্রয়োগ করেছে। ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পর সীমান্তপার থেকে আরও সম্ভাব্য হামলা ঠেকানোর পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদী কাঠামো ধ্বংস করাই ছিল এ হামলার উদ্দেশ্য।


পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ভারত যে প্রত্যাঘাত করেছে, তা পরিমিত, সমানুপাতিক, দায়িত্বশীল ও যা ছড়িয়ে পড়বে না, এমন। ভারতের লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসবাদীদের অবকাঠামো ভেঙে দেওয়া, যাতে সন্ত্রাসীদের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পাঠানো ঠেকানো যায়।


বিক্রম মিশ্রি বলেন, পহেলগাঁওয়ে হামলায় জড়িতদের শাস্তি ও বিচারের জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গত ২৫ এপ্রিল যে বিবৃতি জারি করেছিল, ভারতের এ প্রত্যাঘাতকে সেই আলোতেই দেখতে হবে।


বুধবার ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে এই ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনীর দুই নারী কর্মকর্তা কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং।



ওই দুই কর্মকর্তা দাবি করেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে শুরু করে রাত দেড়টা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপাশে মোট ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে ভারতীয় বাহিনী হামলা চালিয়ে ধ্বংস করেছে।


ব্রিফিংয়ে পাকিস্তান অংশে ধ্বংস করা ঘাঁটির ছবিও দেখান কর্মকর্তারা। ওই দুই কর্মকর্তা বলেন, অপারেশন সিঁদুর কোনো পাকিস্তানি সেনা ঘাঁটির ওপর আক্রমণ করেনি। সাধারণ মানুষকেও নিশানা করা হয়নি। বেছে বেছে নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যবস্তুর ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।


সোফিয়া ও ব্যোমিকা দাবি করেন, প্রথম লক্ষ্য ছিল ভাওয়ালপুরের মারকাজ শুবহান আল্লাহ্। সেখানে জইশ–এ–মহম্মদের জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ শিবির ছিল। বিলাল মসজিদে ছিল লস্কর–ই–তাইয়েবার প্রশিক্ষণকেন্দ্র। কোটলিতে যেখানে হামলা হয়েছে, তা লস্করের ঘাঁটি। এরা পুঞ্চে খুবই সক্রিয়। এসব ঘাঁটি পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে।


ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরেও হামলা চালিয়েছে জানিয়ে সোফিয়া ও ব্যোমিকা আরও দাবি করেন, শিয়ালকোটের যে সার্জাল ক্যাম্পে হামলা হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ৬ কিলোমিটার ভেতরে। এ ছাড়া আক্রমণ চালানো হয় মেহমুনা জোয়া ক্যাম্পে। সেটা হিজবুলের শিবির ছিল। এ শিবিরে প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসীরাই পহেলগাঁওয়ে হামলা চালিয়েছিল।


এই দুই কর্মকর্তা আরও দাবি করেন, লাহোরের কাছে মুরিদকের মারকাজ তৈয়্যেবায় আক্রমণ চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। সেখানেই ২৬/১১ মুম্বাই হামলার সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। আজমল কাসভ ওখানেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলেন।


বিক্রম মিশ্রি বিবৃতিতে বলেন, পহেলগাঁওমে হামলা করার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্বাভাবিক হয়ে আসা কাশ্মীরের পরিস্থিতি ঘোরালো করে তোলা, যাতে পর্যটকেরা না আসেন, অর্থনীতি ধসে পড়ে, উন্নয়নের কাজ থমকে যায়। তা ছাড়া ওই হামলার আরও উদ্দেশ্য ছিল, জম্মু–কাশ্মীরের পাশাপাশি সারা ভারতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে দেওয়া।



বিক্রম মিশ্রি আরও বলেন, টিআরএফ নামে একটি গোষ্ঠী পহেলগাঁওয়ে হামলার দায় স্বীকার করেছিল। তারা জাতিসংঘের নিষিদ্ধ লস্কর–ই–তাইয়েবার শাখা। জাতিসংঘে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে ভারত এদের সম্পর্কে নানা তথ্য জমা দিয়েছিল।

jug/n

// Disable right-click context menu // Disable text selection // Disable dragging of images and text // Disable copy events // Disable common keyboard shortcuts for copying // Check for Ctrl/Command key combinations with C, X, S, or P