Friday, 05 December 2025, 04:07 PM

সাংবাদিকদের সন্ত্রাসী বলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে

মোমিন ইসলাম সরকার, দেবীগঞ্জ পঞ্চগড় প্রতিনিধি: রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রী: পঞ্চগড় জেলার করতোয়া নদীর ঘাটে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের ‘সন্ত্রাসী’ বলে গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাহমিদুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সাংবাদিকদের তীব্র ক্ষোভের মুখে তাকে শুধু দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) বলেছে, “শুধু প্রত্যাহার নয়, এই কর্মকর্তা যেন প্রকাশ্যে ক্ষমা চান।” এদিকে রংপুরে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়ায় সিনিয়র সাংবাদিক লিয়কত আলী বাদলকে প্রকাশ্যে সিটি করপোরেশনের গুন্ডা বাহিনী কর্তৃক

মারধরের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করা হয়েছে। 


ঘটনার পটভূমি: ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করতোয়া নদীর আওলিয়া ঘাটে মহালয়ার দিনে ভয়াবহ নৌকাডুবিতে ৭১ জনের মৃত্যু হয়। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ছিল ওই দুর্ঘটনার তিন বছর পূর্তি। এ উপলক্ষে ৬–৭ জন সাংবাদিক ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহে যান।


ঘটনাস্থলে উপস্থিত ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাহমিদুর রহমান সাংবাদিকদের নদী পারাপারে বাধা দেন। নদীতে অন্য নৌকাগুলো চলাচল করলেও সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলসহ পার হতে দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, “আপনি আল জাজিরার সাংবাদিক হন বা যেই হন, যেতে পারবেন না।”


এরপর তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে আরও বলেন, “আপনারা তো সন্ত্রাসী।”

এই বক্তব্য শতাধিক সাধারণ মানুষের সামনে দেওয়ায় সাংবাদিকরা অপমানিত বোধ করেন এবং এর ভিডিও ফুটেজ ধারণ করেন।


প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া: জেলা প্রশাসক সাবেত আলী সাংবাদিকদের জানান, “ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমানকে আজকের মতো ঘাটের দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।”


তবে ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম। সাংবাদিকরা তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি কোনো মন্তব্য না করে বলেন, “কি পারেন করেন।”


সাংবাদিকদের অভিযোগ: ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি নূর হাসান বলেন, “ঘাট ফাঁকা থাকলেও আমাদের মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়, অথচ অন্য সাধারণ মানুষ ও ইউএনও নিজেও মোটরসাইকেল নিয়ে পার হচ্ছিলেন। সাংবাদিকদের এভাবে বাধা দেওয়া অযৌক্তিক।”


বাংলাভিশনের সাংবাদিক মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের পরিচয় শুনে তিনি বলেন, ‘যেই সাংবাদিক হন, যেতে পারবেন না।’ পরে আমাদের সন্ত্রাসী বলে গালাগাল করেন। একজন সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে এমন আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”


বিএমএসএফ-এর প্রতিক্রিয়া: বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফরএক বিবৃতিতে বলেছে,“সাংবাদিকদের সন্ত্রাসী বলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া যথেষ্ট নয়, ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমানকে অবশ্যই সাংবাদিকদের সামনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।”

// Disable right-click context menu // Disable text selection // Disable dragging of images and text // Disable copy events // Disable common keyboard shortcuts for copying // Check for Ctrl/Command key combinations with C, X, S, or P