Thursday, 02 January 2025, 08:15 PM

সৈয়দপুরে স্ত্রী হত্যা মামলার আসামি স্বামী জাহাঙ্গীর গ্রেফতার

জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে গৃহবধূ শবনম হত্যা মামলার একমাত্র আসামি স্বামী জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে নীলফামারীর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


মামলার ৪ দিন পর বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে স্থানীয় থানার সহযোগিতায় জাহাঙ্গীরকে আটক করতে সক্ষম হয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সৈয়দপুর থানার এস আই হামিদ। শুক্রবার তাকে সৈয়দপুরে আনা হয়।


গত মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টায় শহরের নয়াবাজার এলাকায় তালাবদ্ধ ঘর থেকে গৃহবধূ শবনমের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। পরদিন তার মা ফারজানা বাদী হয়ে মামলা করেছিল।


গ্রেফতার জাহাঙ্গীর শহরের সৈয়দপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়ার (দর্জিপাড়া) মমতাজ হোসেনের ছেলে। পেশায় চটপটি ও ফুচকা ব্যবসায়ী। তিনি দুই সন্তানের জনক।


নিহত শবনম তার দ্বিতীয় স্ত্রী এবং উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর পীরপাড়ার মৃত আব্দুর রহমান ও ফারজানার মেয়ে। তারও আগের ঘরের ১ বছর বয়সী একটা মেয়ে আছে।


প্রথম স্ত্রী সন্তান থাকাবস্থায় এক মাস আগে নিহত শবনমকে বিয়ে করে জাহাঙ্গীর। কিন্তু এতদিন শবনম তার মায়ের বাড়িতেই ছিল। গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) শহরের নয়াবাজার এলাকায় আব্দুল মজিদ খানের বাড়ির একটা রুম ভাড়া নিয়ে সেখানে শবনম কে এনে রাখেন জাহাঙ্গীর। পরদিন শবনমের লাশ পাওয়া যায় ওই ঘরে।


শবনমের মা ফারজানাকে না জানিয়ে পরিকল্পনা করে জাহাঙ্গীর গোপনে শবনমকে নিয়ে যায়। শবনমের মেয়েকে কোলে নিয়ে মেয়ে ও জামাইকে সারাদিন খুঁজে ফেরেন বৃদ্ধা ফারজানা। সন্ধ্যায় শহরের শেরু হোটেল এলাকায় জাহাঙ্গীরের দেখা পেয়ে শবনমের বিষয়ে জানতে চাইলে তাকে ধাক্কা দিয়ে  পালিয়ে যায় জাহাঙ্গীর।


পরে মোবাইল করে বাসার ঠিকানা জানিয়ে শবনমকে নিয়ে যেতে বলে জাহাঙ্গীর। সে অনুযায়ী নয়াবাজার এলাকায় বাসায় গিয়ে তালাবদ্ধ ঘরে মেয়েকে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে লোকজন ছুটে এসে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ তালা ভেঙে লাশ উদ্ধার করে। এরপর থেকে জাহাঙ্গীর পলাতক ছিল।


শবনমের মা ফারজানা বলেন, জাহাঙ্গীর পরিকল্পনা করে আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। আমি এখন মেয়ের অবুঝ মেয়েটিকে নিয়ে কিভাবে বাঁচবো। আমার মেয়ের হত্যাকারীর বিচার চাই।


সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফইম উদ্দিন বলেন, পলাতক আসামীকে গ্রেফতারে তৎপর ছিল সৈয়দপুর থানা পুলিশ। এর প্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।