জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে যৌতুকের জন্য এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ নুর নাহার (২২) মারপিটের চিহ্ন নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাবার বাড়িতে কাতরাচ্ছেন বলে জানা গেছে। নুর নাহার উপজেলার বিমানবন্দর মুন্সিপাড়া গ্রামের নুর নবীর মেয়ে।
এদিকে,ঘটনার ৪ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত নুর নাহারের স্বামী কিংবা ওই পরিবারের কেউ তাকে দেখতে আসেননি এবং কোনও খোঁজ-খবরও নেননি।
নুর নাহার জানান,চলতি বছরের তিন মাস আগে বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের শ্বাসকান্দার ডাঙ্গা পাড়া গ্রামের হোসেন আলী (কালঠুর) ছেলে রফিকুল ইসলামে (২৬) সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয় ৷
বিয়ের সময় যৌতুক হিসাবে নগদ টাকা ও বিভিন্ন ফানিচার পণ্যসহ ৬/৭ টাকা দেওয়া হয় ৷ কিন্তু বিয়ের এক মাস পার হতে না হতেই নুর নাহার পরিবারের কাছে যৌতুক হিসেবে ব্যবসা করার জন্য ৫ লাখ টাকার চাপ প্রয়োগ করে মার ডাংসহ নির্যাতন শুরু করেন রফিকুল।
বাধ্য হয়ে আমি নুর নাহার বাবার বাড়িতে চলে আসি ৷ ২০দিন পর রফিকুল ও তার পরিবারের লোকজন ভুল স্বীকার করে আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান ৷ নিয়ে যাওয়ার এক সপ্তাহ পর আবার যৌতুকের জন্য নির্যাতন শুরু করেন ৷
তিনি জানান, গত ১৮ আগষ্ট ননদ মৌসুমীর বাড়ি বড়ুয়ায় দাওয়াত খেতে যাই ৷ সেখানে বিকালে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে ৷ এর এক পর্যায়ে স্বামী রফিকুল, শ্বাশুড়ি রেখা ও ননদ মৌসুমী আমাকে চুলের মুঠি ধরে মার ডাং করে ৷ আমাকে আহত অবস্থায় তাদের বাড়িতে এনে ওই দিন ৭টার দিকে আমাকে আবারও মার ডাং শুরু করে এবং গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করে ৷ আমি কোন রকম প্রাণে যাই ৷ রাতে আমাকে ঘরে তালা বন্ধ করে রাখে ৷ গভীর রাতে আনুমানিক ৩টায় আমাকে ঘর থেকে বের দিয়ে বলে ৫ লাখ টাকা নিয়ে আসলে আসবি না হলে আর আসবি না ৷
আমি সারা রাত অন্যের ঘরের গোলায় রাত কাটাই ৷ পরে এক নারীর ফোন নিয়ে বাড়িতে খবর দিলে পরিবারের লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ আমার বাম চোখে খুব আঘাত করে অল্পের জন্য নষ্ট হয়নি ৷
পরে আমি জানতে পারি রফিকুল এর আগে তিনটি বিয়ে করেছে ৷ সব স্ত্রী নির্যাতনের কারণে চলে গেছে এবং কেউ মামলা করেছেন ৷ আমি তাঁদের উপযুক্ত বিচার চাই ৷ এদিকে নুর নাহারের বাবা মা বিয়ের তিন মাসের মধ্যে মেয়ের এ অবস্থা দেখে তারা ভেঙ্গে পড়েছে ৷
এব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিলে কোন ব্যবস্থা না হওয়ায় তারা আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান ৷
এব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য
রফিকুল ইসলামের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হয় ৷ ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি ৷
সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল য়াদুদ মুঠোফোনে বলেন, আমি কেবলমাত্র যোগদান করেছি ৷ এব্যাপারে কিছু জানি না ৷ লিখিত অভিযোগ দিয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷