Friday, 05 December 2025, 03:56 PM

শ্রমিক আন্দোলনে উত্তাল নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেড, নিহত শ্রমিক-১-...

কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী: নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের এভারগ্রীন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি (বিডি) লিমিটেডে শ্রমিক অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করেছে। অবৈধভাবে ছাঁটাই, বেতন বকেয়া, নামাজের সময় না দেওয়া ও বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। তিনদিনের উত্তেজনার পর (২ সেপ্টেম্বর) সকালে তা রূপ নেয় সহিংসতায়। এতে হাবিব নামে এক শ্রমিক নিহত ও অন্তত ২০জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আন্দোলনকারীরা নীলফামারী-সৈয়দপুর মহাসড়ক বন্ধ করে। 


গত শনিবার থেকে ১৮ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে এভারগ্রীন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরির শ্রমিকরা। শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং কাজের পরিবেশ উন্নত করার দাবি ছিল তাদের। দাবি না মেনে উল্টো অনির্দিষ্টকালের জন্য ফ্যাক্টরি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এতে উত্তেজনা আরও বাড়ে শ্রমিকদের মাঝে। আজ সকাল ছয়টা থেকে তারা বিক্ষোভে নামেন। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে মাঠে নামে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ এবং পরবর্তীতে গুলি চালানো হয়। এসময় ইকু প্যাকেজিং কোম্পানির শ্রমিক হাবিব হোসেন নিহত হন। আহত হন এভারগ্রীন ফ্যাক্টরির অন্তত ২০ জন শ্রমিক। নিহত হাবিব হোসেনের বাড়ি নীলফামারী সদরের সংগলশী কাজিপাড়া এলাকায়।


নিহতের বাবা দুলাল হোসেন বলেন, আমার ছেলে ইকু প্যাকিং কোম্পানিতে চাকুরী করে। সে রাতের বেলা ডিউটিতে গেছে। সে সকালবেলা বাড়ির ফেরার পথে সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে। আমার ছেলে তো আন্দোলনে ছিলো না। সে অন্য কোম্পানিতে কাজ করে। তারপরেও কেনো আমার ছেলেকে হত্যা করা হলো। আমি এর বিচার চাই। 


নিহতের হাসপাতালের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন, আর বার বার বলতে শোনা গেছে। ভাইরে তুই তো সকালে বাড়িতে আসার কথা। কিন্তু তোর এমন হলো কেনো। এখন আমি কাকে ভাই বলে ডাকবো।  


শ্রমিকরা বলছেন, বেবজা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু শ্রমিক বলেছেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গত শনিবার থেকে আন্দোলনে করতেছি। তারা আমাদের দাবী না মেনে উল্টো অনির্দিষ্টকালের জন্য কোম্পানী বন্ধ করেছেন। সকালে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে আমাদের দাবী না মেনে আমাদের উপর লাটিচার্জ শুরু করে। এক পর্যায়ে টিয়ারগ্যাসসহ সরাসরি গুলে ছুড়ে। তারা কতটা নিচু হলে একজন শ্রমিক ডিউটি থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে গুলি করে হত্যা করে। আমরা এর তীব্রনিন্দা জানাই। হত্যাকারীদের বিচারসহ অবিলম্বে এই সমস্ত ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান চাই।    


নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ফারহান তানভীর ইসলাম বলেছেন, সকালে ৬জন শ্রমিককে হাসপাতালে আনা হয়েছে তাদের মধ্যে একজনকে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আহতের চিহ্ন রয়েছে। এসব পরিক্ষা নিরিক্ষার প্রয়োজন। 


এছাড়াও সৈয়দপুরের ১০০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে আহতদের।  বর্তমানে উত্তরা ইপিজেড এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্য মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

// Disable right-click context menu // Disable text selection // Disable dragging of images and text // Disable copy events // Disable common keyboard shortcuts for copying // Check for Ctrl/Command key combinations with C, X, S, or P