বিডি নীয়ালা নিউজ(২৬জানুয়ারি১৬)-স্বাস্থ ও চিকিৎসা প্রতিবেদনঃ বলা হয়ে থাকে যে সকালের নাস্তা সারাদিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। VTT Technical Research Center পরিচালিত এক নতুন গবেষণায় জানা যায় যে, একদল স্বাস্থ্যবান মানুষ আছেন যারা ডায়েটিং করা ছাড়াই তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখেন। এ ধরণের মানুষদের তিনটি জিনিস তাদের নাস্তায় খেয়ে থাকার প্রবণতা দেখা যায়। Comell University এর এক প্রতিবেদনে Katherine Baildon বলেন, “মানুষ ওজন কমানোর জন্য বা ওজন ঠিক রাখার জন্য এমন নিয়ন্ত্রণ মূলক খাদ্যাভ্যাস অবলম্বন করে যা বজায় রাখা অনেক কঠিন হয় এবং অবশেষে ওজন বৃদ্ধি পায়। যে সকল মানুষ ডায়েটিং করা ছাড়াই স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে পারে তারা একটি আকর্ষণীয় দল গঠন করে। এই দলটিকে Comell University এর Food and Brand lab এর গবেষকরা “মাইন্ডলেস স্লিম” নামে অবিহিত করেন”। গবেষকরা দেখেন যে, এই দলের প্রত্যেকে প্রতিদিন একই রকম খাবার সকালের নাস্তায় খায়, আর তা হল- ফল, দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং ঠান্ডা খাদ্যশস্য বা গ্রেনোলা। Indipenent এর মতে, সবচেয়ে জনপ্রিয় আইটেম হল ফল (৫১%), দুগ্ধজাত দ্রব্য দ্বিতীয় স্থানে (৪১%) এবং তৃতীয় অবস্থানে ঠান্ডা খাদ্যশস্য বা গ্রেনুলা (৩৩%)।
সকালের নাস্তায় এই দলটির ৩১% ডিম পছন্দ করে। মজার বিষয় হচ্ছে বেশি মানুষ ডিমের চেয়ে রুটি পছন্দ করে (৩২%)। এতে বুঝা যায় যে স্বাস্থ্যবান মানুষ শর্করা গ্রহনে ভয় পায়না। Indipenent এর মতে, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মাত্র ২৬% সকালে কফি খেয়ে থাকে। এতে গবেষকেরা বিস্মিত হয়ে বলেন যে, আমরা কল্পনা করতে পারছিনা কিভাবে ওই দলটির ৭৪% মানুষ সকালে কফি না খেয়ে পারেন।
এমন কি হতে পারে যে, এই দলটির অংশগ্রহণকারীদের বিপাকের হার অনেক ভালো বলে তারা যা ইচ্ছা তাই খেতে পারে? অথবা তাদের খাদ্য নির্বাচন তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর গবেষকেরা দিয়েছেন। Baildon বলেন, “মাইন্ডলেস স্লিম ও অন্যদের মধ্যে ওজন নিয়ন্ত্রণের পন্থার বিভিন্নতা লক্ষ করা যায়। অমনোযোগী পাতলা ব্যক্তিরা প্রথাগত ওজন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির চেয়ে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে। তাদের এই পন্থার অন্তর্ভুক্ত বিষয় গুলো হল- উচ্চগুণ সম্পন্ন খাদ্য, বাসায় রান্না করা, পাতলা থাকার জন্য নিজের ভেতরের ইঙ্গিত শোনা। এছাড়াও তারা তাদের বিপরীত দলের মত অতিরিক্ত খাওয়া নিয়ে অপরাধ বোধে ভোগেনা। মাইন্ডলেস স্লিম ব্যক্তিরা আনন্দ উপভোগ করে এবং খাদ্য ও খাওয়ার বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকে।
এই গবেষণাটির নেতৃত্বদানকারী গবেষক, Anna-Lina-Vourinen উপসংহারে বলেন, “অতিরিক্ত ওজন বা ওজন বৃদ্ধি পাওয়া প্রতিরোধের জন্য প্রিয় খাবার এড়িয়ে চলা এবং কারো খাদ্যের প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিজের ভেতরের ইঙ্গিত শোনা এবং খাদ্যের পরিমাণের চেয়ে মানের দিকে গুরুত্ব আরোপ করা”।
এই গবেষণাটি এই ইঙ্গিত বহন করে যে, স্বাস্থ্যবান মানুষরা তাদের কি খাওয়া উচিৎ এই নিয়ে চিন্তার পরিবর্তে তারা উচ্চগুণ সম্পন্ন খাদ্য নির্বাচন করে, যা তাদেরকে সন্তুষ্ট রাখে। তারা তাদের আভ্যন্তরীণ সংকেতের ব্যপারে সচেতন থাকে। তাই তারা পেট ভরে গেলে খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করতে পারে এবং ক্ষুধা না লাগলে তারা খায়না।