বিডি নীয়ালা নিউজ(২০ই ফেব্রুয়ারী১৬)-বিনোদন ডেস্কঃ বাঙ্গালীর অন্যতম অনুপ্রেরণা একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলন। এর চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে প্রতি মুহূর্তে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। তবে আমাদের এ ‘অহংকারের’ প্রস্ফুটিত অবস্থান তৈরি করতে পারেনি চলচ্চিত্র অঙ্গন।
বাংলাদেশে স্বাধীনতার ছয় দশকে ছোট পরিসরে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণ হলেও ভাষা আন্দোলন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কোন চলচ্চিত্র নির্মিত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে এই শিল্পের গুণীজনদের মত, বর্তমানে দেশাত্ববোধের কমতি, রাজনৈতেক পটপরিবর্তন, ভাষার প্রতি অবহেলা আর মুক্তিযুদ্ধের প্রতি মমতা সংকেটর কারণে এমনটা ঘটছে।
তবে ভালো পরিবেশ, সরকারি ‘সুনজর’ আর দেশাত্ববোধ জাগ্রত করতে পারলে এই শিল্পের সুদিন আসবে বলেও মন্তব্য তাদের। যদিও ছোট আকারে কিছু মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।
এছাড়া সরকারি অনুদানের ক্ষেত্রে চলচ্চিত্র নির্মাণে একধরনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও চলচ্চিত্রের পর্দায় এটি বলার মতো করে সেভাবে আজ পর্যন্ত উঠে আসেনি। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে জহির রায়হানের ‘জীবন থেকে নেয়া’। আজ থেকে ৪৬ বছর আগে ১৯৭০ সালে নির্মিত হয়েছিল ধ্রুপদী এ চলচ্চিত্রটি। এখন পর্যন্ত চলচ্চিত্রে ভাষা আন্দোলনের অন্যতম স্মারক হিসেবে বিবেচিত এই চলচ্চিত্রটি।
প্রতিবারই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আগে কিংবা পরে ঘুরে-ফিরে আসে এ চলচ্চিত্র’র প্রসঙ্গ। এ ছবিতে একুশে ফেব্রুয়ারিতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে প্রভাতফেরির একটি দৃশ্য রয়েছে। যা এ চলচ্চিত্রকে আরও বিখ্যাত করে তুলেছে। কিন্তু তারপরও সর্বোপরি একটি প্রশ্ন থেকে যায়? কি কারণে স্বাধীনতার ছয় দশক পেরিয়ে গেলেও ভাষা আন্দোলনের বিষয়ের উপর চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হচ্ছে না?
পাকিস্তান আমলে স্বাভাবিকভাবেই ভাষা আন্দোলন কেন্দ্রীক ছবি নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। এরপর ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের সময়ে জনগণের শক্তিতে আমরা একটি ছবিই নির্মাণ করতে পেরেছিলাম। সেটি হল-‘জীবন থেকে নেওয়া’। এছাড়া ভাষা আন্দোলন নিয়ে ছবি নির্মাণের আর কারও সাহস হয়নি। কারণ ভাষা আন্দোলন কেন্দ্রীক ছবি নির্মাণ করলে সেন্সরবোর্ড থেকে ছাড়পত্র পাবে বলে মনে হত না। এরপরই তো মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। মুক্তিযুদ্ধ এমন একটি ব্যাপার যেটি ভাষা আন্দোলন থেকে আরও বেশি গুরুত্ব পেয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
হাসান ইমামের মতে, ‘মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রীক ছবি তৈরি হল ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত। এরপর বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু পরে জিয়াউর রহমানের মৌখিক নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রীক ছবিগুলোর প্রদর্শন বন্ধ হয়ে গেল। এরপর এক ধরনের বিরূপ পরিবেশে আর কেউ সাহস করল না ভাষা আন্দোলন কেন্দ্রীক ছবি নির্মাণ করার জন্য।’ ‘পরবর্তীতে আবার পরিবেশ পরিবর্তিত হয়েছে। পুরোটাই রাজনৈতিক কারণে একুশে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীক চলচ্চিত্র আমরা নির্মাণ করতে পারিনি। তবে এখন কিছু কিছু ছবি নির্মাণ হচ্ছে।’