Saturday, 21 December 2024, 09:38 PM

ইসরায়েলি বাহিনী সিরিয়ার দামেস্কসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিমান হামলা...

সম্প্রতি সিরিয়ায় ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান অন্তত শতাধিক হামলা চালিয়েছে। এসব হামলা সিরিয়ার বিভিন্ন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে পরিচালিত হয়েছে, যার মধ্যে দামেস্কের একটি গবেষণা কেন্দ্রও রয়েছে, যা রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির সন্দেহভাজন স্থান হিসেবে চিহ্নিত। সিরিয়ার নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হওয়া এ হামলাগুলো গত ৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা এ হামলা করেছে যাতে অস্ত্রগুলো "সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর হাতে" না পড়ে, বিশেষত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর।


হামলার পর, সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (SOHR) জানিয়েছে, গত দুই দিনে সিরিয়ায় ১০০টিরও বেশি হামলা হয়েছে। এসব হামলায় একটি রিসার্চ সেন্টার লক্ষ্যবস্তু হয়, যা রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির কাজে ব্যবহৃত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হামলার লক্ষ্য ছিল ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো এবং সিরিয়ার সামরিক স্থাপনা, যার মাধ্যমে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছে। একই সময়ে, জাতিসংঘের রাসায়নিক অস্ত্র পর্যবেক্ষক সংস্থা (OPCW) সিরিয়ার কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছে যাতে তারা রাসায়নিক অস্ত্রের সম্ভাব্য মজুদ নিরাপদ রাখে।

ইসরায়েলি বিমান হামলার পর, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে, এবং দেশটির একাধিক সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে ইরান সমর্থিত বিজ্ঞানীদের দ্বারা ব্যবহৃত একটি রকেট উন্নয়ন কেন্দ্র, যা সন্দেহ করা হচ্ছে, রাসায়নিক অস্ত্রের উৎপাদনে ব্যবহৃত হতো। হামলার জন্য ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, তারা সিরিয়ায় "সন্ত্রাসী" গোষ্ঠীগুলোর হাত থেকে অস্ত্রগুলো আটকাতে চাইছে।

অন্যদিকে, সিরিয়ায় শরণার্থী ও সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।গত এক মাসে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী আরও অনেক হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে একটি অস্ত্র ডিপো এবং প্যালমিরার আশপাশের স্থান ছিল, যেখানে ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া যোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যরা বসবাস করছিল। এই হামলায় ৬৮ জন সিরীয় এবং বিদেশি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।

এদিকে, গত রবিবার(০৮ডিসেম্বর) সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর, ইসলামিক বিদ্রোহী গোষ্ঠী "হায়াত তাহরির আল-শাম" (HTS) দামেস্কে প্রবেশ করে এবং শহরটি "মুক্ত" ঘোষণা করে। তারা যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা প্রকাশের জন্যও প্রস্তুত। এই ঘটনার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, এটি "মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক দিন" এবং তারা শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে প্রস্তুত।

মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি জটিল ও অস্থির হয়ে উঠছে, এবং ইসরায়েল ও সিরিয়ার সম্পর্ক আরও সংকটময় হয়ে উঠতে পারে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী, সিরিয়ার গোলান মালভূমি এবং সেখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আরও সতর্কতা জারি করেছে। তথ্যসূত্র : বিবিসি

dai/N